নিজস্ব প্রতিবেদক : ১ কেজি মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হবে এটা জীবনেও কল্পনা করিনি। কিন্তু বাস্তবে সেটাই ঘটছে। অন্য সবজিও প্রতি কেজি ৮০-১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বলতে গেলে চালসহ সবকিছুরই দাম বেড়েছে। বাড়তি দ্রব্যমূল্যের কারণে আমাদের মতো মধ্যবিত্তের মানুষেরও এখন নাভিশ্বাস অবস্থা।
কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীর বাসিন্দা হাসনা বেগম। তার কথার সত্যতা মিলল বাজারে গিয়েও।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর পরও কিছুতেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। লাগামহীনভাবে বাড়ছেই বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। পণ্যের দাম বাড়লেও সেই হারে সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি, যার ফলে এখন নিম্ন আয়ের মানুষই শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।
রাজধানীর পশ্চিম ভাষানটেকের বাসিন্দা আবদুল আউয়াল বলেন, ‘মাছ-মাংসের বিকল্প হিসেবে ডিম কিনি। যেভাবে দাম বেড়েছে তাতে ডিম খাওয়াও বাদ দিতে হবে। সব সবজির দামও নাগালের বাইরে। একসময় ডাল ও আলুর ভর্তা দিয়ে একবেলা খাওয়া গেলেও আলুর যে দাম তাতে আলু ভর্তা খাওয়াও ছেড়ে দিতে হচ্ছে।’
সরকার দর বেঁধে দিয়েও ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। অর্থাৎ, এক হালি ডিমের দাম পড়ছে ৬০ টাকা। আর প্রতি পিসের দাম পড়ছে ১৫ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে আরও বেশি দামে তা বিক্রি হচ্ছে।
গত জুলাইয়ের তুলনায় অক্টোবরের খুচরা পর্যায়ে মোটা চাল ব্রি-২৮ ও পাইজাম প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১১ শতাংশ দাম বেড়ে মানভেদে ৬০ থেকে ৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৩ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৮৫ থেকে ২০০ টাকায় উঠেছে। বাজারে মাছের সংকট না থাকলেও ১২ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে মাঝারি রুই মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন সব ধরনের সবজির দাম চড়া।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জুমবাংলাকে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিত্যপণ্যের বাজারে আমরা তেমন কোনও পরিবর্তন দেখিনি। বরং গত দুই মাসে সব পণ্যের দাম বেড়েছে।’
নিত্যপণ্যের দাম কমতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ (৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পণ্যের ঘাটতি হবে না। এরই মধ্যে কিছু পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে অধৈর্য না হতে আহ্বান জানান তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি যেমন একদিনে বাড়েনি, তেমনি কমতেও সময় লাগবে। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে, যা আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। চিনির ওপর শুল্ক কমানো হচ্ছে বলেও এ সময় জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।