জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকায় আগাম পেঁয়াজের (মুরিকাটা) দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০৫ টাকা হয়েছে। দু’দিন আগেও ঢাকায় যা বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।
পাইকারি বিক্রেতা বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমার কথা জানালেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব এখনো দৃশ্যমান হয়নি।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী, হাতিরপুল, মালিবাগ ও শান্তিনগরে মান ভেদে পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা।
শান্তিনগর বাজারের হাসান স্টোরের মালিক খলিল মিয়া জানান, বাজারে ভালো মানের পেঁয়াজ বেশি দামে এসেছে।
এই পেঁয়াজের মান কিছুটা ভালো হওয়ায় দামও বেড়েছে। তবে পেঁয়াজের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই বলে জানান তিনি।
রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রকাশিত বাজার দরের প্রতিবেদনেও মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার বিভিন্ন বাজারে নতুন দেশী পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি এ জাতের পেঁয়াজের দাম ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়; আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশী ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২৩ ও ২৬ শতাংশ।
মুড়িকাটা পেঁয়াজের অন্যতম প্রধান উৎপাদন এলাকা পাবনার সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলাতেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সোমবার এসব উপজেলায় স্থানীয় পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৭১ থেকে ৭৮ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় জেলায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে সেখানে নতুন পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।
রসুন ও আদাসহ অন্য কারি-পণ্যের দামও কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। মঙ্গলবার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৭০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০ ও ২৬০ টাকা।
গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে বাকি সব সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
তবে মানভেদে শিম, বেগুন ও টমেটো ৬০ থেকে ১০০ টাকা, আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কিউকারবিটেসিয়াস ৮০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি স্পোন লাউ ৮০ টাকা, আমড়া ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মুলা ও গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা কেজি, ফ্রেঞ্চ শিম ১০০ থেকে ১১০ কেজি, লাউ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, কুমড়া (মাঝারি আকারের) ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ফুলকপি ও ব্রকলি ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। আকার ও মানের বিচারে প্রতিটি লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি, ক্যাপসিকাম (লাল) ৩০০ থেকে ৩৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
অস্বস্তি থেকে গেছে মাছ-গোশতের বাজারে। প্রতি ডজন বাদামি ডিম (মুরগি) ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, সাদা ডিমের চেয়ে ৫-১০ টাকা কম। হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং দেশী গৃহপালিত মুরগির ডিম প্রতি ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক মাস আগের তুলনায় এখন মাছের দাম বেশি। তবে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস ও কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। অন্য মাছের মধ্যে দেড় কেজি থেকে দুই কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ (চাষের) প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাবদা, টেংরা, কই, শিট (বোয়াল), চিতল ও ইলিশ মাছ কেজি প্রতি ৬০০ টাকার নিচে মিলছে না।
কারওয়ান বাজারে কোরাল, বোয়াল ও নদীর পাঙ্গাসের মতো বড় মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে।
দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার বিরুদ্ধে তার অফিস অভিযান চালাবে।
তিনি আরো বলেন, কয়েক মাস আগে দাম নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ-আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাংলাদেশের ভোক্তারা কঠিন সময় পার করছেন।
খামারের ডিম, ব্রয়লার মুরগি এবং চাষের মাছ দেশের লাখ লাখ দরিদ্র মানুষের প্রধান প্রোটিনের উৎস।
নাজের বলেন, এ ধরনের সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী তাদের প্রোটিন ও অন্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
সূত্র : ইউএনবি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।