বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: পৃথিবী বিখ্যাত মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বছর হতে যাচ্ছে ২০২৩। বিদ্যুচ্চালিত উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে চাঁদের নভোচারীদের নতুন স্পেসস্যুট উন্মোচনের পরিকল্পনা করে রেখেছে সংস্থাটি।
তবে, নাসার জন্য জন্য ২০২২ সালের অর্জনগুলোকে টপকে যাওয়া বেশ কঠিন কাজ হবে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টিতে মহাবিশ্বকে দেখাতে শুরু করেছে সংস্থাটি; ভূপৃষ্ঠে গ্রহাণু বা ধুমকেতু আছড়ে পড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শঙ্কা মোকাবেলার কৌশল হিসেবে ডার্ট নভোযান দিয়ে গ্রহাণুর গতিপথও বদলে দিয়েছে নাসা।
শুধু তাই নয়; আর্টেমিস ওয়ান মিশনের অংশ হিসেবে ওরিয়ন নভোযানকে চাঁদের কক্ষপথ থেকে ঘুরিয়ে এনে চন্দ্রযাত্রার ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু করেছে সংস্থাটি।
গতবছরের এত সাফল্যের পর ২০২৩ সালের জন্যেও একাধিক পরিকল্পনা করে রেখেছে সংস্থাটি। সম্প্রতি প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় সে পরিকল্পনাগুলো নিয়ে সংক্ষেপে জানিয়েছেন বিল নেলসন। ভিডিও বার্তার শুরুতেই নাসা প্রধান বলেছেন, “আমরা মহাকাশে অজানা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধান কখনোই বন্ধ করবো না।”
২০২৩ সালের পুরোটা জুড়েই ব্যস্ত থাকবে নাসা। সংস্থাটি আর্টেমিস টু মিশনের নভোচারীদের নাম ঘোষণা করবে এ বছরেই। পাঁচ দশকের ব্যবধানে চন্দ্রপৃষ্ঠে মানব নভোচারীদের ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করছে সংস্থাটি। আর্টেমিস টু মিশনের নভোচারীদের জন্য নতুন স্পেসস্যুটের প্রোটোটাইপও উন্মোচন করা হবে এ বছরেই।
২০২৩ সালেই কোম্পানির ইতিহাসে প্রথমবারের মত স্টারলাইনার স্পেসক্র্যাফটের মাধ্যমে নাসার নভোচারীদের ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ পৌঁছে দেবে বোয়িং।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট লিখেছে, সম্ভবত স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন নভোযানের প্রতিযোগী হিসেবে দৃশ্যপটে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে বোয়িং।
অন্যদিকে, ওসাইরিস-রেক্স মিশনের অংশ হিসেবে ‘বেন্নু’ গ্রহাণু থেকে নমুনা পৃথিবীতে আসবে এ বছরেই। বারবার পিছিয়ে গেলেও গ্রহাণু থেকে ধাতব পদার্থ সংগ্রহের ‘সাইকি’ মিশনও ২০২৩ সালেই উৎক্ষেপণের আশা করছে নাসা।
এ বছরে নাসার প্রকল্পগুলোর গন্তব্য কেবল দূরের মহাকাশ– এমনটা নয়। পৃথিবীর দিকেই নজর থাকবে ‘টেমপো’ স্যাটেলাইটের; জলবায়ু দূষণের তথ্য সংগ্রহ করবে এটি। এ ছাড়াও, নাসা পৃথিবীর আবহাওয়া, ভূপৃষ্ঠ, পানি তথা সার্বিক জলবায়ু নিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও ভাগবাটোয়ারার প্রকল্প ‘আর্থ ইনফর্মেশন সেন্টার’ চালু করবে এ বছরেই।
পাশাপাশি আকাশভ্রমণ প্রযুক্তিতেও নতুন বিপ্লব ঘটাতে চায় সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে সংস্থাটির বাজির ঘোড়া এক্স-৫৯ সুপারসনিক এয়ারক্র্যাফট এবং সম্পূর্ণ বিদ্যুচ্চালিত এক্স-৫৭ এয়ারক্র্যাফট।
আর জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ থেকে মহাবিশ্বের নতুন নতুন ছবি আসাও অব্যাহত থাকবে। ছবিগুলো থেকে মহাবিশ্বের নানা অজানা তথ্য আবিষ্কারের অপেক্ষায় আছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
নতুন বছর উপলক্ষ্যে নাসা প্রধানের ভিডিও বার্তার শেষ কথাটি ছিল, ‘আমরা নাগালের বাইরে থাকা নক্ষত্রের দিকেও হাত বাড়িয়ে দেব’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।