গণিতবিদেরা ২০২৪ সালে অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন বলা যায়। ২০২৪ সালেই এখন পর্যন্ত জানা সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যা আবিষ্কার করেছেন গণিতবিদেরা। পাইয়ের জন্য নতুন সূত্র, জোহান সেবাস্টিয়ান বাখের সংগীতের রহস্যময় নিদর্শন থেকে শুরু করে একটি নতুন ধরনের গাণিতিক কাঠামো তৈরির মতো চমক এ বছরেই তুলে ধরেছেন গণিতবিদেরা। এসব আবিষ্কারের মধ্যে কিছু কাজ ব্যবহারিক আবার কিছু কাজ তাত্ত্বিক।
আইনস্টাইনের হারানো টালির খোঁজে
গণিতবিদদের ধারণা, কোনো পুনরাবৃত্তির প্যাটার্ন তৈরি না করে একটি একক আকৃতির পৃষ্ঠকে টালি বা টাইল দিয়ে আবৃত করা যায়। এমন কাঠামোকে আইনস্টাইন টাইল বা টালি বলা হয়। অনেকেই মনে করতেন, এ ধরনের আকৃতি হয়তো থাকতে পারে। গবেষকেরা অবশেষে এ ধরনের একটি টালি আবিষ্কার করেছেন। মাথার আকৃতির এই টালি দিয়ে পৃষ্ঠকে আচ্ছাদন করা যাবে, যেখানে কোনো প্যাটার্নের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। টালিটি ২০২৩ সালে তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
জোহান সেবাস্টিয়ান বাখের লুকানো বার্তার খোঁজ
একদল পদার্থবিদ আঠারো শতকের জনপ্রিয় সুরকার জোহান সেবাস্টিয়ান বাখের লেখা মিউজিক্যাল স্কোরকে গাণিতিক নেটওয়ার্কে রূপান্তরে সাফল্য পেয়েছেন এ বছর। তাঁরা বিশ্লেষণ করে বাখের রচনার মধ্যে বিভিন্ন শৈলী বের করেছেন। বিভিন্ন সংগীতের নিদর্শন খুঁজে বের করার জন্য ইনফরমেশন থিওরি তত্ত্ব ব্যবহার করেন বিজ্ঞানীরা। বাখ কীভাবে সংগীত, গাণিতিক ও মানসিক তথ্য কাজে প্রকাশ করেন, তা জানার পথ বের করেছেন তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ সুমন কুলকার্কিনি এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন।
অসম্ভব মাত্রাকে গণনা
সবকিছু তো গণনা করা যায় না। যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, সবকিছু কি আসলেই গণনা করা সম্ভব? একটি নির্দিষ্ট অগণনাযোগ্য অভিব্যক্তিকে বিজি বিভার ফাংশন বলা হয়। বিভার একধরনের ধারালো দাঁতওয়ালা লোমশ উভচর প্রাণী। এসব প্রাণীর ব্যস্ততাকে রূপক অর্থে গণিতে বিজি বিভার ফাংশন নামকরণ করা হয়েছে। এই ফাংশনের মান কখনোই n সংখ্যক পরিমাণের জন্য জানা যাবে না। বিজি বিভার চ্যালেঞ্জ নামে একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে সম্প্রতি এই ফাংশনের পঞ্চম মান নির্ধারণে সফলতা পেয়েছেন গণিতবিদেরা। তাঁরা প্রথম দিকে এমন আবিষ্কারকে বেশ অসম্ভব ভেবেছিলেন।
একাধিক মাত্রায় একটি চাকার অবস্থান
৪০ বছর ধরে গণিতবিদেরা যেকোনো মাত্রায় ন্যূনতম আয়তনের ধ্রুবক-প্রস্থের আকার খুঁজে পেতে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি এই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে। এ জন্য গণিতবিদেরা একটি নতুন ধরনের বহুমাত্রিক চাকা কল্পনা করেছেন। বৃত্ত বা গোলকের মতো প্রচলিত ঘূর্ণমান আকারের ভগ্নাংশ মাত্রায় নতুন এই চাকা তৈরি করা যায়। গণিতবিদেরা এমনভাবে চাকাটি তৈরি করেছেন, যা দুটি পৃষ্ঠের মধ্যে চলার সময় মসৃণভাবে ঘুরতে পারে। অর্থাৎ চার, পাঁচ বা যেকোনো উচ্চসংখ্যক স্থানিক মাত্রার মধ্যেও সহজেই ঘুরতে পারে চাকাটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।