চীনের তিয়ানান-২ মিশন চেষ্টা করবে গ্রহাণু থেকে নমুনা নিয়ে ফেরার। ২০২৫ সালের মে মাসে পরিকল্পিত এই অভিযান প্রথমে চালানো হবে ৪৬৯২১৯ কামো’ওয়ালিওয়া গ্রহাণুতে। এটি ১৩১-৩২৮ ফুট দীর্ঘ এই গ্রহাণু হয়তো এককালে চাঁদেরই অংশ ছিল, এমনটাই ধারণা বিজ্ঞানীদের।
তাঁরা মনে করেন, বড় কোনো সংঘর্ষে এটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কাজেই, এ গ্রহাণুতে গবেষণা করে সৌরজগতের সূচনাকাল ও এর গঠন-কাঠামো গড়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি নিয়ে আরও ভালোভাবে জানতে চান বিজ্ঞানীরা। এ জন্য তিয়ানান-২ গ্রহাণুটির বুকে স্বল্প সময়ের জন্য নামবে, দ্রুত নমুনা সংগ্রহ করে আবার দেবে ছুট। এরপর এটি অ্যাস্টেরয়েড বেল্ট বা গ্রহাণু বেষ্টনীর একটি গ্রহাণু ৩১১পি/প্যানস্টার্স-এও নেমে নমুনা সংগ্রহ করবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ছাড়াও বৃহস্পতির বরফচাঁদগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে ইসার জুস মিশন। নাসার লুসি মিশন বৃহস্পতির ট্রোজান গ্রহাণুগুলোতে অভিযান চালানোর কথা রয়েছে। স্পেসএক্স জানিয়েছে, বুস্টারের পাশাপাশি মূল স্টারশিপ রকেটটিও শূন্যে থাকতে ধরার চেষ্টা করবে তারা ২০২৫ সালে। রয়েছে আরও বেশ কিছু মিশন, যেগুলোর পরিকল্পনা এখনো সুনির্দিষ্ট হয়নি।২০২৫ সাল মহাকাশ অভিযানের জন্য একটা রোমাঞ্চকর বছর হতে যাচ্ছে, এটুকু বোধ হয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই।
জাপানের এম২/রেজিলিয়েন্স চাঁদে যেতে পারে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে। এ মিশনে একটি ল্যান্ডার এবং একটু মাইক্রো-রোভার নামবে চাঁদের পৃষ্ঠে। এই মিশনে চাঁদের মাটি ও এর বিভিন্ন উপাদান নিয়ে গবেষণা চালানো হবে। পানির মূল উপাদান হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন। চাঁদের বুকে পানির অণু ভেঙে ফেলে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপাদন করা যায় কি না, পরীক্ষা করে দেখা হবে তাও।
এই পানি অবশ্য পৃথিবীর পানি নয়। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে পানি বের করে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে এ সময়। লক্ষ্য হলো, সেই পানিকে তাপ দেওয়া এবং ভেঙে যাওয়া হাইড্রোজেন-অক্সিজেন অণুযুক্ত বাষ্প সংগ্রহ করা। এই পানি, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন প্রয়োজন পড়বে যেকোনো দীর্ঘকালীন চন্দ্র অভিযানে।
চাঁদের বুকে নিখুঁতভাবে অবতরণ এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে রোভার চালানোর জন্য নতুন প্রযুক্তি—অ্যাডভান্সড নেভিগেশন সিস্টেম পরীক্ষা করে দেখা হবে এ মিশনে। ভবিষ্যতের চাঁদ ও মঙ্গল মিশনে এ সিস্টেম কাজে লাগতে পারে।
ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসা ২০২৫-এর জুলাই-সেপ্টেম্বরে স্পেস রাইডার নামে মানবহীন একটি মিশন পরিচালনা করবে পৃথিবীর নিম্ন-কক্ষপথে। এটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য নভোযান, নিম্ন-কক্ষপথে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হবে।
এ সময় মাইক্রোগ্র্যাভিটি বা প্রায় ওজনহীন পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা ও গবেষণা চালানো হবে। দেখা হবে, এরকম পরিবেশে গাছ কীভাবে বেড়ে ওঠে, বিভিন্ন পদার্থ কী রকম আচরণ করে, বিভিন্ন জৈব প্রক্রিয়ার ওপর মহাকর্ষের প্রভাব ইত্যাদি।
এ ছাড়া ভবিষ্যতের বিভিন্ন মিশনে যেসব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে, এর কিছু কিছু পরীক্ষা করে দেখবে স্পেস রাইডার। যেমন সর্বাধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হবে এতে। চাঁদ বা মঙ্গলে ব্যবহৃত হবে, এমন কিছু রোবটিক যন্ত্রপাতিও পরীক্ষা করে দেখা হবে এ সময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।