দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য : বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অভূতপূর্ব বছর পার করে আমরা নতুন বছরে উপনীত। আমি নিশ্চিত, নতুন বছরটিও অনন্য অভিজ্ঞতায় জাতীয় ইতিহাসে ও মননে স্থান করে নেবে।
৫ আগস্ট সম্পৃক্ত সময়কালকে আমরা যদি বিবেচনা করি, তাহলে তার একটি ‘পূর্ব পর্ব’ লক্ষ্য করা যায়। এটি মূলত গত দেড় দশকের শেখ হাসিনার শাসনামল। আওয়ামী লীগের না বলে আমি একনায়কতন্ত্রের বিবেচনায় শেখ হাসিনার শাসনামল বলছি। এই পূর্ব পর্বের ভেতরে যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছিল, তার প্রকাশ আমরা ২০২৪ সালে দেখেছি। এই প্রকাশের সময়কে আমি বলছি ‘কাল পর্ব’। আর ২০২৫ হবে ‘উত্তর পর্ব’। কাল পর্ব শেষ করে নতুন পরিস্থিতিতে নতুন ভারসাম্যে পৌঁছানোই হচ্ছে উত্তর পর্বের চিহ্ন।
২০২৪ সালের ভেতরে একদিকে যেমন পূর্ব পর্ব ছিল, আরেক দিকে কাল পর্বও ছিল। কালপর্বের মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে সরাতে সক্ষম হয়েছি। এর মাধ্যমে আরেকটি নতুন যাত্রার সূচনা করতে পেরেছি। কালপর্বের একটা অংশে ধ্বংসের জায়গাটাই বড় ছিল। আরেকটি অংশে ধ্বংসের পর নতুন সৃষ্টির ভিত্তি তৈরি হয়েছে। সুতরাং কালপর্বের শেষ এবং উত্তর পর্বের শুরু নিয়ে ২০২৫ সাল এসেছে।
সংস্কারের দুই ধারা
এখন আমরা দেখছি, অনেকের চূড়ান্ত আকাঙ্ক্ষা রাষ্ট্র সংস্কারের, শুধু সরকার বদল নয়। তাদের মধ্যে রাষ্ট্র ও তার বিভিন্ন অঙ্গের ম্যান্ডেট ও তার পরিচালন ইত্যাদি পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আবার অনেকে মনে করেন, সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে জনসম্পৃক্ত যেসব বিধিবিধান এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিষয় রয়েছে, সেগুলোকে ঠিক করতে হবে। আগের সরকারের আমলের দুর্জনদের শাস্তি দিতে হবে। ফলে আমরা এই মুহূর্তে দুই ধরনের সংস্কার বা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার ধারা লক্ষ্য করছি। সেই অর্থে পরিবর্তন, পরিমার্জন বা সংস্কারের যে অসম্পূর্ণ আকাঙ্ক্ষা, সেটা নতুন স্থিতাবস্থায় উত্তরণের প্রত্যাশাকে ধারণ করে নতুন বছর এলো। ২০২৫ এর মধ্যে ওপরের দুই ধারার ব্যবস্থাপনার তথা সংস্কারের কোনটা প্রাধান্য পাবে, তা দেখার বিষয়। সংস্কারের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার কতখানি উচ্চাভিলাষী হবে, তা ২০২৫ সালের বাস্তবতার ভেতর দিয়ে প্রকাশিত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যে নির্বাচনের সীমান্ত রেখা ঘোষণা করেছেন। ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হবে ধরে নিলেও নির্বাচনের মূল কাজটা ২০২৫ সালের মধ্যে হবে। ২০২৫ সালে মানুষের মূল প্রত্যাশার জায়গা হবে, নির্বাচনী ধারা যাতে সুষ্ঠুভাবে বেগবান হয়। নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক দলের দৃষ্টিতে নয়, মানুষের, অর্থাৎ নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টিতে কতটুকু অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক পরিস্থিতিতে হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনী ধারা বেগবান করার অন্যতম পূর্বশর্ত হিসেবে সংস্কারের বিষয়টি আছে। আমরা অন্য সব পুনর্লিখন, সংশোধন বা পরিমার্জন স্থগিত রাখলেও নির্বাচন সম্পর্কিত সংস্কারকে পেছনে ঠেলার সুযোগ নেই।
আমার কাছে মনে হয়, সরকারি প্রক্রিয়ার সংস্কারের চেয়ে এই মুহূর্তে আমরা কাঠামোগত সংস্কারে বেশি ব্যাপৃত আছি। এটি অভিলাষের দিক থেকে হয়তো উত্তম, কিন্তু সরকার এবং এর প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়াটা প্রয়োজনের নিরীখে বেশি উপযুক্ত। দ্বিতীয়টা করলে জনজীবনে অধিকতর স্বস্তি আসত। উপরন্তু, নির্বাচনের ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বের হওয়ার সুযোগ ছিল। উচ্চাশা ও বাস্তবতার মিথস্ক্রিয়া ২০২৫-এ আমাদের কোথায় নিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয়।
রাষ্ট্র সংস্কারে বেশি মনোযোগ এবং উচ্চাঙ্ক্ষার কারণে চলমান সম্ভাবনাগুলোর জায়গায় অথবা মূল্যস্ফীতি বা নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদি বিষয়ে আমরা কম নজর দিচ্ছি কিনা, ভাবতে হবে। যেমন– রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে আনুপাতিক ভোট, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য, দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকা ইত্যাদি বিষয় সংবিধান সংস্কারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নির্বাহী আদেশ বলে এগুলো করলে পরবর্তী সময়ে সংসদের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে। এগুলো যারা করতে চাচ্ছেন, তারা কিন্তু চূড়ান্ত বিচারের সিদ্ধান্তের মালিক নন। চূড়ান্ত বিচারের মালিক হবেন আগামী দিনের সংসদ সদস্যরা। এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি লাগবে এবং তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে তা থাকতে হবে। তবে এটি নিয়ে কোনো রাজনৈতিক এবং সামাজিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে অন্যান্য সংস্কার বিশেষত সামষ্টিক অর্থনীতি এবং বিভিন্ন খাতওয়ারি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ভেস্তে যেতে পারে। কারণ, তখন মনোযোগ অন্যদিকে চলে যাবে। একই সঙ্গে যারা বিধিবিধান এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করছেন, তারা ভীত না হোক, সংকুচিত হয়ে যাবেন। কারণ, তারাও তো এক ধরনের ‘কথিত বৈধতার শূন্যতা’র মধ্যে কাজ করছেন।
কার্যকরী ঐকমত্যের প্রয়োজন
২০২৫ সালে বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা হলো সংস্কার এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার পক্ষে ন্যূনতম কার্যকরী জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এটি সর্বজনীন ঐকমত্য হতে হবে, এমন নয়। কার্যকরী ঐকমত্য হলো এমন এক মূল বা নিয়ামক অংশীজনের মাঝে সমঝোতা, যা নিয়ে সরকার তাঁর ঘোষিত লক্ষ্যের দিকে এগোতে পারবে। ওই রকম কার্যকরী ঐকমত্য সৃষ্টির বছরই হবে ২০২৫ সাল। বাংলাদেশের উত্তরণকে স্থিতি হওয়ার জন্যই এই কার্যকরী ঐকমত্য সৃষ্টির প্রয়োজন হবে।
এখন এর জন্য অভিলাষের মাত্রা কী হবে, তা বুঝতে হবে। অর্থাৎ, রাষ্ট্র সংস্কারে চূড়ান্ত যা চেয়েছিলাম, হয়তো তা হবে না, কিন্তু আগামী দিনের সরকারে যারা আসবে, তারা আগের মতোই চালাবে, তা যেন না হয়। ন্যূনতম প্রয়োজনটা হলো, আমরা যেন আগের ক্ষমতাহীনতার অবস্থায় ফিরে না যাই। তাই আগের অবস্থায় ফিরে না যাওয়ার জন্য কিছু রক্ষাকবচ তৈরি করতে হবে। রক্ষাকবচ তৈরির জন্য রাষ্ট্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো। কিন্তু সরকারের ভেতরও এমন অনেক কিছু আছে, যেগুলো আমরা যদি ঠিকমতো সংস্কার করতে পারি, তাহলেও কিন্তু একটা নাগরিক অধিকারের রক্ষার ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হবে। এই পরিবর্তন আগামী দিনের প্রগতিশীল ও মানবিক বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি করতে পারবে।
আমার প্রত্যাশা, ২০২৫ সালে সরকারের ভেতর তথা সমাজের সব ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্তের সঠিকতা এবং স্বরূপ নিশ্চিত করার একটা প্রক্রিয়া শুরু হোক। স্বচ্ছতার প্রক্রিয়াটাই জবাবদিহির পূর্বশর্ত। এতদিন কারা কত টাকা নিয়ে গেছে, কোথা থেকে নিয়ে গেছে, এগুলো আমরা বিস্তারিতভাবে জানতাম না। অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে প্রণীত শ্বেতপত্রের ভেতর দিয়ে আমরা তা উপলব্ধি করতে পেরেছি। এগুলো কেন হয়, তাও বুঝতে পেরেছি। এখন সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। আমরা শ্বেতপত্রে বলেছি, এগুলোর তিনটি খারাপ নির্বাচনের (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) মধ্য দিয়ে সূত্রপাত হয়। আমরা ভোট দিতে পারিনি। স্বৈরতান্ত্রিক সরকার তার গণতান্ত্রিক জবাবদিহির ঘাটতি বিভিন্ন ধরনের দৃশ্যমান প্রকল্প দিয়ে আড়াল করতে চেয়েছে। এর ভেতর দিয়ে তারা এমন কিছু ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, যার ফলে জাতীয় অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক কিছু ব্যক্তির সঙ্গে সমঝোতার মধ্যে ঢুকেছে। এই কলুষ সংযোগে আমলারা ভাগ বসিয়েছে। সুতরাং পরিবর্তনটা এমনভাবে হোক, যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি আর ফেরত না আসে।
আমরা জানি, সংস্কারের ক্ষেত্রে গঠিত কমিশনগুলো ২০২৫ সালের প্রথম দিকেই তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। শ্বেতপত্র প্রকাশ-পরবর্তী অর্থনীতির ওপর আলোচনাও শক্তিশালী হবে। ব্যাংক, জ্বালানি খাতসহ যেসব বিষয়ে টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে, তাদের সুপারিশ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া জাতীয় বাজেট সামনে রেখে একটা মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো তৈরির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সমস্যা
এই মুহূর্তে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, উচ্চমাত্রার দ্রব্যমূল্যের কারণে তার জীবন ধারণের জন্য দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে পারছে না। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকার সংকোচনমূলক পদ্ধতি নিয়েছে। এর ফলে আবার সুদের হার বাড়ছে। এর উল্টো দিকের ফলাফল হলো, সুদের হার বাড়ার ফলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। এর সঙ্গে ব্যক্তি খাতে জ্বালানির সংকট রয়েছে। আবার এখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হলো, শিল্পাঞ্চলে শান্তি নেই। মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদের হারের বাইরে আর যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলোর সুরাহা করতে পারলে ব্যক্তি বিনিয়োগ কিছুটা বৃদ্ধি পেত। করের ক্ষেত্রে যে হয়রানি হয়, সেখানে করদাতাদের সুরক্ষা দিতে হবে। বিনিয়োগ করতে গিয়ে যত ধরনের ‘লাল ফিতা’ আছে, সেখান থেকে সুরাহা দিতে হবে। আমদানি করতে গেলে বন্দরে যেসব সমস্যা হয়, তার সমাধান করতে হবে। শ্রমিকদের ভালোভাবে জীবন ধারণের সুযোগ এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার দেওয়ার মতো বিষয়ও রয়েছে।
এই সময়কালে সরকারি খাতে যতটুকু বিনিয়োগ হবে, তার ভেতর থেকে কতখানি সেই বিনিয়োগ স্থানীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করবে, সেই বিষয়ও দেখতে হবে। এর প্রতিফলনের বড় জায়গা হবে সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি। সরকারের নতুন প্রচেষ্টা শুধু বরাদ্দ বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে নয়, সেই বরাদ্দের কাঠামোর পরিবর্তনের মাধ্যমে দেখাতে হবে। অর্থাৎ, বর্ধিত বরাদ্দ যেন শুধু ইমারত তৈরিতে চলে না যায়। সরকার কি জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করবে নাকি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষায় গুণগত পরিবর্তন আনবে, সেটাই দেখার বিষয়। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলোর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার উন্নতি করার বিষয় রয়েছে। জ্বালানি খাতের জন্যও মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাবনাগুলো রয়েছে। একই সঙ্গে যেসব মেগা প্রকল্প চলমান রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেখানে দ্রুতগতিতে অর্থ দেওয়া এবং সময়মতো শেষ করা জরুরি।
সম্মানজনক প্রস্থানের ভিত্তি
অবশ্যই সংস্কার-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০২৫ সালে একটি কার্যকরী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কিছু মনোযোগ নষ্টকারী বিষয় থাকবে। আমরা দেখব কালপর্ব থেকে উত্তরপর্বে উত্তরণের এই প্রচেষ্টাকে বিলম্বিত বা বিঘ্নিত করার চেষ্টা হবে। ‘পার্শ্ব অভিনয়’ আমাদের মনোযোগ মূল মঞ্চ থেকে অন্যদিকে সরিয়ে নিতে পারে। যেহেতু উত্তরণের এই সময়কালে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্ভরযোগ্যভাবে স্থিতিশীল নয়। অনেক ক্ষেত্রে আমরা উগ্র মতবাদ প্রকাশ করছি এবং বিভিন্ন ধরনের অসহিষ্ণুতা দেখাচ্ছি, যা বৈষম্যবিরোধী চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এটি কিন্তু আগে উল্লেখ করা দুই ধরনের সংস্কারকের আকাঙ্ক্ষাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে আগামী বছর।
পরিশেষে বলব, যারা সীমিত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার করতে চান, তারা বিরাজমান আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলো আগামী দিনের উত্তরণের ক্ষেত্রে কতখানি নির্ধারক হয়ে দাঁড়াবে, তা হয়তো যথেষ্টভাবে উপলব্ধি করছেন না। অথবা তাদের উচ্চাশা এত, দেখা গেল, সর্বোত্তম করতে গিয়ে হয়তো উত্তমটাই করতে পারলেন না। আমি ইতিবাচকভাবেই বলছি। আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতার গ্রহণযোগ্য সমন্বয়ের ভিত্তিতে আমি বাস্তবসম্মতভাবে ২০২৫ কে দেখার পক্ষপাতী। ঐকমত্য সৃষ্টির জন্য ‘ন্যূনতম ভালো’ যেটুকু করতে চাই, তাকে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। সীমাবদ্ধ সময়ে, সীমিত সামর্থ্যে এবং অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিবেশে কী করে অন্তর্বর্তী সরকার সম্মানের সঙ্গে প্রস্থান করবে, সেটাই হবে ২০২৫-এর নির্বাচন-পূর্ব অন্যতম বিবেচ্য। বর্তমান সরকার যদি ২০২৫-এর শেষে বা ২০২৬-এর প্রথমার্ধের মধ্যে একটি সফল জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করে, তাহলে ২০২৫ হবে তাদের সেই গৌরবপূর্ণ উত্তরাধিকারের ভিত্তি বছর।
লেখক : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি; আহ্বায়ক, এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এবং প্রধান, বাংলাদেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।