২০২৬ সালের ছুটির তালিকা ইতোমধ্যে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন করেছে সরকার। সরকারি-আধা সরকারি অফিস, সংবিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত এবং আধা সরকারি সংস্থার জন্য এই ছুটির তালিকা প্রযোজ্য। রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে এই তালিকা প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-৬ শাখা।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী বছর নির্বাহী আদেশে ২৮ দিন সরকারি ছুটি থাকবে। এর মধ্যে ১১ দিন পড়েছে শুক্র ও শনিবার।
এর আগে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নির্বাহী আদেশে ২২ দিন সাধারণ ছুটি ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০২৫ সালে রোজার ঈদে পাঁচ দিন, কোরবানির ঈদে ছয় দিন এবং দুর্গাপূজায় দুই দিন করে ছুটি ঘোষণা করেছিল। ফলে সাধারণ ছুটি বেড়ে ২৮ দিন হয়।
২০২৬ সালেও রোজার ঈদে পাঁচ দিন, কোরবানির ঈদে ছয় দিন এবং দুর্গাপূজায় দুই দিন করে ছুটি রাখা হয়েছে। এবারের ছুটির তালিকাও সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে ছুটি এবং ধর্মভিত্তিক ঐচ্ছিক ছুটি—এই তিন ভাগে বিভক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আসুন জেনে নিই কোন কোন ছুটি রয়েছে এবারের তালিকায়—
সাধারণ ছুটি (১৪ দিন)
২১ ফেব্রুয়ারি – শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
২০ মার্চ – জুমাতুল বিদা
২১ মার্চ – ঈদুল ফিতর
২৬ মার্চ – স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস
১৩ এপ্রিল – চৈত্রসংক্রান্তি (শুধু রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার জন্য)
১ মে – মে দিবস
১ মে – বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী পূর্ণিমা)
২৮ মে – ঈদুল আজহা
৫ আগস্ট – জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস
২৬ আগস্ট – ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
৪ সেপ্টেম্বর – জন্মাষ্টমী
২১ অক্টোবর – দুর্গাপূজা (বিজয়া দশমী)
১৬ ডিসেম্বর – বিজয় দিবস
২৫ ডিসেম্বর – যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন (বড়দিন)
নির্বাহী আদেশে ছুটি (১৪ দিন)
৪ ফেব্রুয়ারি – শবে বরাত
১৭ মার্চ – শবে কদর
১৯, ২০, ২২ ও ২৩ মার্চ – ঈদুল ফিতরের আগের দুই দিন ও পরের দুই দিন
১৪ এপ্রিল – বাংলা নববর্ষ
২৫, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১ মে – ঈদুল আজহার আগের দুই দিন ও পরের তিন দিন
২৬ জুন – আশুরা
২০ অক্টোবর – দুর্গাপূজা (নবমী)
এছাড়া রয়েছে কিছু ঐচ্ছিক ছুটি। যেমন—
ঐচ্ছিক ছুটি (মুসলিম পর্ব)
১৭ জানুয়ারি শবে মেরাজ, ২৪ মার্চ ঈদুল ফিতর (ঈদের পরের তৃতীয় দিন), ১ জুন ঈদুল আজহা (ঈদের পরের চতুর্থ দিন), ১২ আগস্ট আখেরি চাহার সোম্বা এবং ২৪ সেপ্টেম্বর ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম।
ঐচ্ছিক ছুটি (হিন্দু পর্ব)
২৩ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা; ১৫ ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রি ব্রত; ৩ মার্চ দোলযাত্রা; ১৭ মার্চ হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব; ১০ অক্টোবর মহালয়া; ১৮ ও ১৯ অক্টোবর দুর্গাপূজা (সপ্তমী ও অষ্টমী); ২৫ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা এবং ৮ নভেম্বর শ্যামা পূজা।
ঐচ্ছিক ছুটি (খ্রিষ্টান পর্ব)
১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ; ১৮ ফেব্রুয়ারি ভস্ম বুধবার; ২ এপ্রিল পুণ্য বৃহস্পতিবার; ৩ এপ্রিল পুণ্য শুক্রবার; ৪ এপ্রিল পুণ্য শনিবার; ৫ এপ্রিল ইস্টার সানডে এবং ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসব (বড়দিনের আগে ও পরের দিন)।
ঐচ্ছিক ছুটি (বৌদ্ধ পর্ব)
১ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমা; ১৩ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তি (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া অন্য সব জেলার জন্য); ৩০ এপ্রিল ও ২ মে বুদ্ধপূর্ণিমা; ২৯ জুলাই আষাঢ়ী পূর্ণিমা; ২৬ সেপ্টেম্বর মধু পূর্ণিমা (ভাদ্র পূর্ণিমা) এবং ২৫ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমা (আশ্বিনী পূর্ণিমা)।
ঐচ্ছিক ছুটি (পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা ও এর বাইরে কর্মরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত কর্মচারীদের জন্য)
১২ ও ১৫ এপ্রিল বৈসাবি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর অনুরূপ সামাজিক উৎসব।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন কর্মচারীকে তাঁর নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে সর্বোচ্চ তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেওয়া যাবে। তবে এ জন্য বছরের শুরুতে প্রত্যেক কর্মচারীকে নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদন নিতে হবে। সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেওয়া যাবে।
যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি তাদের নিজস্ব আইনকানুন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয় অথবা যেসব অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের চাকরি সরকার অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করেছে, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নিজস্ব আইনকানুন অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে এই ছুটি ঘোষণা করবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



