আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আজকাল বিশ্বের খুব কম জায়গায় রাতের আকাশের নির্মল রূপ দেখা যায়। আলোর দূষণের কারণে সেই রাতের আকাছে তারা দেখাও দিন দিন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানিরা বলছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে রাতের আকাশে আর তারা দেখা যাবে না। বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নজিরবিহীন গতিতে বাড়ছে আলো দূষণ।
দ্য গার্ডিয়ানের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালেই মহাকাশ গবেষকরা জানিয়েছিলেন যে- বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ আর রাতের আকাশে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি দেখতে পান না। তবে গত সাত বছরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। যে হারে রাতের আকাশে দূষণ বাড়ছে তাতে আগামী ২০ বছরের মধ্যে বড় নক্ষত্রপুঞ্জগুলো আর খালি চোখে দৃশ্যমান থাকবে না। এই ক্ষতি সাংস্কৃতিক এবং বৈজ্ঞানিকভাবে অত্যন্ত তীব্র হবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী মার্টিন রিস বলেছেন, রাতের আকাশ আমাদের পরিবেশের অংশ। পরবর্তী প্রজন্ম যদি রাতের আকাশে তারা দেখতে না পায় তাহলে এটি হবে বড় একটি ক্ষতি। এখন যেমন তারা পাখির বাসা দেখেনি কখনও। শুধুমাত্র জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাই তাই এ নিয়ে চিন্তিত হবে বিষয়টি এমন নয়।
জার্মান সেন্টার ফর জিওসায়েন্সের পদার্থবিদ ক্রিস্টোফার কাইবার গবেষণায় দেখা গেছে যে, আলোক দূষণ এখন প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এক পর্যায়ে আকাশে থাকা সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রও মানুষ আর খালি চোখে দেখতে পারবে না। আজ একটি শিশু জন্মালে সে রাতের আকাশে ২৫০টি তারা দেখতে পাবে। তবে তার বয়স যখন ১৮ হবে তখন সে আকাশে মাত্র ১০০টি তারা খুঁজে পাবে।
আলোর দূষণ গোটা বিশ্বে একটা সমস্যা হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর বুকে এমন জায়গার সংখ্যা কমে চলেছে, যেখানে সত্যি অন্ধকার আকাশ দেখা যায়। কৃত্রিম আলো রাতের আকাশ উজ্জ্বল করে তুলছে। এর ফলে শুধু জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও শখের পর্যবেক্ষকদের সমস্যা হচ্ছে না। কৃত্রিম আলোর কারণে আমাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। রাতে সক্রিয় পোকামাকড় চিরকাল নক্ষত্রের আলোর উপর ভিত্তি করে দিক নির্ণয় করে এসেছে। কৃত্রিম আলো এই প্রাণীগুলির জন্য মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে। পোকামাকড়ের মৃত্যুর জন্য আলোর দূষণকে দায়ী করা হয়। এই দূষণের ফলে পাখিও দিক নির্ণয় করতে পারছে না। উদভ্রান্ত হয়ে পাখি এমনকি আলোকিত ভবনে ধাক্কা মারছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।