জুমবাংলা ডেস্ক : বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি চলছে শুক্রবারও। শুক্রবার সকালে আর সূর্য ওঠেনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আকাশে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব শুরু হওয়ায় সারাদিনই থেমে থেমে পড়েছে বৃষ্টি। গত ২৪ ঘণ্টায় বছরের রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ৪৭৮ মিলিমিটার। এটা চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
নিকলী ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে ৩৪০ এবং নেত্রকোনায় ৩১১ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটে ১৩৬, যশোরে ৯৯, কক্সবাজারে ৯১, টাঙ্গাইলে ৮৮, বগুড়ায় ৮৩, ঢাকায় ৮০, শ্রীমঙ্গলে ৭১, ফরিদপুরে ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, চলতি বছরের রেকর্ড অনুযায়ী আজ নিকলীর ৪৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি। এর আগে ৫০০ মিলিমিটারও বৃষ্টি হয়েছে। তবে সেটা কোন বছর তা ডাটা না দেখে এখন বলা সম্ভব নয়। তিনি জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি চলবে শনিবার দুপুর পর্যন্ত। এরপর আস্তে আস্তে তা কমে আসবে বলে তিনি জানান।
টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে রাজধানীর রাস্তাঘাট। শহরের অলিগলি এখনও পানির নিচে।
বছরের এই সময়ে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। তারা বলছেন এই বৃষ্টির জন্য যেমন জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী, তেমনি জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী নদী-খাল ভরাট।
ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশের সমন্বয়কারী শরীফ জামিল বলেন, সারাদেশের নদী-খাল দখল ও ভরাট করে অপরিকল্পিত অসংখ্য স্থাপনা নির্মাণ করায় চলমান বৃষ্টিতে বিভিন্ জায়গায় প্রচণ্ড জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে আবার একে বন্যা বলে চালিয়ে দেবে। আমার হবিগঞ্জের বাসায় ৬০ বছরের ইতিহাসে আজ প্রথম পানি ঢুকেছে। আমি তো গত ২০ বছর যাবৎ বলে আসছি জলবায়ু পরিবর্তন আর নিয়ন্ত্রণহীন দখল সংস্কৃতির কারণে এমন মানবিক বিপর্যয় আসবে। কে আমার ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেবে আমি জানতে চাই।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে আবহাওয়ার এক সতর্কবার্তায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে দেওয়া ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। তবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে রাত পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, কুমিল্লা, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।