ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ মাত্র ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করে ৩ লাখের বেশি মহাকাশীয় বস্তুর ছবি তুলেছে। এই ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বলজ্বলে গ্যালাক্সি ক্লাস্টার, গ্যাসের রঙিন মেঘ ও সবচেয়ে বড় সর্পিলাকার গ্যালাক্সির ছবি।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইসা) জানিয়েছে, আগামী আরও ছয় বছরে ইউক্লিড রাতের আকাশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জায়গার ছবি তুলবে। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি গ্যালাক্সির ছবি তোলা যাবে। এসব গ্যালাক্সির বয়স হবে ১ হাজার কোটি বছরেরও বেশি।
বর্তমানে ইউক্লিডের তোলা কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে ইসা। এগুলোর মধ্যে দুটি হলো অ্যাবেল ২৩৯০ ও অ্যাবেল ২৭৬৪। অ্যাবেল ২৩৯০ পৃথিবী থেকে প্রায় ২৭০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে পেগাসাস নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত। এই নক্ষত্রপুঞ্জে আরও প্রায় ৫০ হাজার গ্যালাক্সি রয়েছে।
অন্যটি অর্থাৎ অ্যাবেল ২৭৬৪ গ্যালাক্সিটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। এটি ফিনিক্স নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থিত। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কিছু গ্যালাক্সি একে অপরের চারপাশে ঘুরছে।
আরেকটি ছবি হলো মেসিয়ার ৭৮। এটি পৃথিবী থেকে ১ হাজার ৩০০ আলোকবর্ষ দূরে ওরিয়ন নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, গ্যাস ও ধূলিকণার মধ্যে তৈরি হচ্ছে নক্ষত্র। ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপের ইনফ্রারেড ক্যামেরার সাহায্যে এ ছবি তোলা হয়েছে।
পরের ছবিটি একটা সর্পিলাকার ছায়াপথের। নাম এনজিসি ৬৭৪৪। এটি লোকাল গ্রুপ থেকে ৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এ ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারবেন, গ্যালাক্সির মধ্যে কীভাবে নক্ষত্র গঠিত হয়। পাশাপাশি সর্পিলাকার গ্যালাক্সির ভূমিকাও আবিষ্কার করতে পারবেন।
প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে একটি ছায়াপথ ডোরাডো। এখানে দুটি গ্যালাক্সি কাছাকাছি দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ভবিষ্যতে গ্যালাক্সি দুটি একে ওপরের সঙ্গে সংঘর্ষের লিপ্ত হয়ে দুটি এক হয়ে যাবে।
ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণ করা হয় ২০২৩ সালের ১ জুলাই। উদ্দেশ্য, ডার্ক ইউনিভার্স, অর্থাৎ ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। মানে মহাকাশে ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির প্রমাণ খোঁজা হচ্ছে এই টেলিস্কোপটির সাহায্যে।
গবেষকেরা মনে করেন, মহাবিশ্বের প্রায় ৯৫ ভাগ গঠিত হয়েছে ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির সাহায্য। কিন্তু এগুলো যেহেতু আলোর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে না, তাই এদের দেখা যায় না। তবে দেখা না গেলেও মহাবিশ্বে এর অস্তিত্ব আছে বলে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস। আসলেই কি বিজ্ঞানীদের ধারণা ঠিক কি না, তা পরীক্ষা করে দেখবে ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।