জুমবাংলা ডেস্ক : বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি বাবদ অর্থ পরিশোধে ২৪টি ব্যাংকের সঙ্গে বন্ড ইস্যুর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছে অর্থ বিভাগ। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুৎ ভবনে ২৪ ব্যাংক, পাওনাদার বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি ও বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যে এ চুক্তি সই হয়। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিল বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের (আইপিপি) বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। সরকারের কাছে বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ঋণের বিপরীতে ১২ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করা হবে। বুধবার নতুন করে ৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হলো।
সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকির অর্থ পরিশোধে ২৪ ব্যাংকের এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেখানে মোট অর্থের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। বুধবার বন্ড ইস্যুর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হতে পারে। এরপর আগামী ৩-৪ কর্মদিবসের মধ্যে এই বন্ড ইস্যু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ২৪টি ব্যাংক বন্ড ইস্যুর বিষয়ে সম্মত হয়ে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। তবে কোন কোন ব্যাংক এতে সম্মত হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হলেই আমরা বন্ড ইস্যুর ব্যবস্থা করবো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন সংকটের কারণে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ ইতোমধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এসব ঋণ খেলাপি হয়ে পড়লে ব্যাংকগুলোকে বিপদে পড়তে হবে। কারণ দেশের বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যাংকগুলোর বড় অংকের অর্থায়ন রয়েছে। এ অবস্থায় বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও ব্যাংকগুলোকে সাময়িক স্বস্তি দিতে চাইছে সরকার। এজন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ঋণের বিপরীতে ১২ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করা হবে। এ অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমতেও পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
তথ্য বলছে, বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলোর অনুকূলে বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রথমে বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করবে। ব্যাংকগুলো সেই বন্ড কিনে নেবে। ব্যাংকের কাছ থেকে বন্ড কেনা বাবদ সরকার যে টাকা পাবে, সেটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পরিশোধ করে দেবে। তখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সে অর্থ আবার ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করে দেবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার হাত থেকে বেচে যাবে এবং এর বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে না। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো বন্ডের অর্থের সমপরিমাণ বিধিবদ্ধ জমার (এসএলআর) বাধ্যবাধকতাও পূরণে ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়া ব্যাংকগুলো এ বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রেখে রেপোর মাধ্যমে তারল্য সুবিধাও নিতে পারবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বকেয়া বিলের পুরো অর্থ না পেলে বন্ডের সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করতে পারবে এবং এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় কমে আসবে ও খেলাপি হওয়ার হাত থেকে রেহাই পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।