অনিল চন্দ্র রায়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর-গোরকমন্ডল এলাকায় ধরলা নদীর খেয়াঘাটে (ঘেরুরঘাট) ২৭ দিন ধরে পারাপার বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নদীর দুই পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ।
এই খেয়া ঘাট থেকে লালমনিরহাট জেলা শহরে দূরত্ব কম হওয়ায় প্রতিদিনই উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালারহাট, পশ্চিম-ফুলমতি, গোরকমন্ডল ও চর-গোরকমন্ডল এলাকার শতশত মানুষ এই ঘাট দিয়ে লালমনিরহাটে যাতায়াত করে।
গোরকমন্ডল বিডিআর বাজার ও আনন্দ বাজারের মুদি দোকানদার, কাপড় ব্যবসায়ী ও কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা লালমনিরহাট জেলা শহর থেকে দোকানের মালামাল ক্রয় করে এই ঘাট দিয়েই বাজারে আসে। কলার আড়ত হিসাবে খ্যাত চর- গোরকমন্ডল এলাকার কলা ব্যবসায়ীরা জীবন-জীবিকার তাগিদে এই ঘাট পাড়ি দিয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলাসহ মোগলহাট, দুরাকুটিহাট, মেগারাম, ভাটিবাড়ী ও কোদাল খাতা হাট-বাজারে গিয়ে কলা বিক্রি করে।
এছাড়া লালমনিরহাট সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্ধশত শিক্ষার্থী এই ঘাট দিয়ে প্রতিষ্ঠানে যায়। কিন্তু দীর্ঘ ২৭ দিন থেকে খেয়াঘাট বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারাও।
শনিবার (২৭ জুলাই) সরজমিনে ঘেরুরঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষ নৌকায় করে ধরলা নদী পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু সকাল থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও ঘাটের ইজারাদার বা নৌকার মাঝি কারও দেখা না পেয়ে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট জেলার মিজান মিয়া নামের এক ব্যক্তি কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ হতে মানুষ, যানবাহন ও মালামাল পারাপারের জন্য ঘেরুর ঘাট ৭০ হাজার টাকায় ইজারা নেন। নিয়ম অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে ঘাট পরিচালনা কথা থাকলেও ২৭ জুলাই পর্যন্ত তা চালু হয়নি। আর পুরাতন ইজারাদার ওবাইদুল হক তার নৌকা ও ঘর সড়িয়ে নিয়েছেন। ফলে বিপাকে পড়েছেন পাড়াপাড়কারী ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।
লালমনিরহাট সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী রুবেল মিয়া, নুরনবী, মুদি দোকানদার নুর ইসলাম ও আশরাফ আলী জুমবাংলাকে জানান, ঘাট বন্ধ থাকায় ২৭ দিন ধরে স্কুল কলেজ যেতে পারছি না। আনতে পারছি না দোকানের মালামাল।
কলা ব্যবসায়ী নুর ইসলাম ও মগর আলী জুমবাংলাকে জানান, ২৭ দিন ধরে ঘাট বন্ধ থাকায় কলা বাড়িতে পঁচে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে পানির দামে কলা বিক্রি করছি।
ঘাট এলাকার স্কুল শিক্ষক রেদওয়ানুল ইসলাম এবং বাসিন্দা মতিয়ার রহমান জুমবাংলাকে জানান, ঘাট পারাপার ২৭ দিন ধরে বন্ধ থাকায় দ্রুত ঘাট চালুর জন্য গত ৮ জুলাই কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ও ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর শতশত মানুষের স্বাক্ষরিত একটি আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও ঘাট চালু হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঘাটের ইজারাদার মিজান মিয়াকে ফোন করে ঘাট বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর না দিয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগটি কেটে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মোছা. আলেয়া খাতুন জুমবাংলাকে জানান, খেয়াঘাট কেন বন্ধ রাখা হয়েছে তা জানতে চেয়ে ইজারাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করি, আগামী দুই -এক দিনের মধ্যে খেয়াঘাট চালু হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।