জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নানা সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন ধরে ২৯ জন চিকিৎসকের স্থলে মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের সেবা দেয়া হয়। চার বছর ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ছয় বছর ধরে প্যাথলজি বন্ধ, নেই কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
বিভিন্ন সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় ভোগান্তিতে রোগীরা। ভাঙ্গা উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের চিকিৎসার জন্য তৈরি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি রুগ্ণ-জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকায় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত ভাঙ্গা বিশ্বরোড মোড় চৌরাস্তা। এখান দিয়ে প্রতিদিন হাজারও যানবাহনে চলাচল করে দক্ষিণাঞ্চলবাসী। সড়ক দুর্ঘটনা এখানে প্রতিদিনই ঘটে। দুর্ঘটনায় আহত রোগীর সেবা ও ভাঙ্গা উপজেলায় বসবাসরত পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন ২ শতাধিক রোগী। অসুস্থতাজনিত, সড়ক দুর্ঘটনা এবং মাতৃসেবায় ভর্তি থাকেন গড়ে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী। হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় এসব রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাগজ-কলমে ২৯ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র তিনজন। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় মূল্যবান এক্স-রে মেশিনটি অকেজো হয়ে আছে। দক্ষকর্মীর অভাবে ও যন্ত্রপাতি অকেজো থাকায় প্যাথলজি বিভাগ প্রায় বন্ধ। হাসপাতালের ভেতর-বাইর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যে পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকার কথা তাও নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন হাসপাতালটির বেহাল অবস্থা। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চললেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব রয়েছে, যা কিছু আছে সেগুলো দিয়েও সেবার মান কিছুটা উন্নত করা যায়। কিন্তু তাদের খামখেয়ালিপনার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় প্রায় ৫ লাখ মানুষকে।
এদিকে, হাসপাতালের নিচতলাসহ ওপর তলার ছাদ ও ভিমের অংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পলেস্তারা খসে পড়ছে চিকিৎসাধীন রোগীদের ওপর। ডজন খানেক জানালার গ্রিল নষ্ট হয়ে খুলে পড়েছে। সব মিলিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের মুখে একটাই কথা হাসপাতালটি এখন আর স্বাস্থ্যসেবা দেবে কি সে নিজেই রোগীতে পরিণত হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধূ সাবিনা আক্তার বলেন, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। চিকিৎসাসেবার মান খুবই খারাপ। পরীক্ষা-নিরীক্ষা সবই বাইরে থেকে করতে হয়েছে। সময়মতো ডাক্তারও পাইনি। হাসপাতালের ভেতর নোংরা পরিবেশ। রোগীরা সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হন।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র ভাঙ্গা হাসপাতালটি পুরনো। এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের রোগীরা আসেন। চিকিৎসক সংকট, প্যাথলজিক্যাল বিভাগ বন্ধ থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা দিতে পারছি না। নিজস্ব তহবিল থেকে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও পাহারাদার নিয়োগ দিয়েছি আমরা। এখানে যদি চাহিদামতো চিকিৎসক পাওয়া যেত তবে সেবা নিতে আসা রোগীরা তাদের প্রকৃত সেবা পেতেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।