জুমবাংলা ডেস্ক: সৌদি আরবে রিয়াদের শাকরা এলাকার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে তিনজনের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায়। তাদের মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসহায় পরিবারগুলো। খবর ইউএনবি’র।
নিহতরা হলেন- মনোহরদী উপজেলার তাঁরাকান্দি গ্রামের মান্নান মাঝির ছেলে জামাল উদ্দিন মাঝি, তাঁতারদি শেখেরগাঁও এলাকার রশিদুল হকের ছেলে ইমদাদুল হক ও ডোমনমারা খিদিরপুর এলাকার আব্দুল মান্নান শেখের ছেলে মো.আল আমিন।
নিহতদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই প্রবাসীর এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের মাতম। পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। উপার্জনক্ষম স্বজনের এমন মৃত্যুতে শোকে নির্বাক হয়ে আছেন স্বজনদের কেউ কেউ। শেষবারের মতো দেখার ইচ্ছায় সরকারের মাধ্যমে দ্রুত লাশ ফিরে পাওয়ার দাবি পরিবারগুলোর।
একই সাথে সরকারের প্রতি দরিদ্র এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তাঁরাকান্দি গ্রামের নিহত জামাল উদ্দিন মাঝির শোকার্ত মা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘এক শতাংশ ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কোনো সম্পদ না থাকায় পরিবারের সুখের আশায় ৫ লাখ টাকা ধার দেনা করে ২৯ দিন আগে ছেলেকে সৌদী আরবে পাঠিয়েছিলাম। প্রথম দিন কাজে যোগ দিতে যাওয়ার পথেই সড়ক দুর্ঘটনায় পরপারে চলে গেলো আমার ছেলে।’
দিলরুবা বেগম বলেন, ‘চার ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আমি এখন অসহায় হয়ে পড়লাম। কে সংসারের হাল ধরবে? আমার স্বামীকে শেষবারের মতো দেখতে চাই, সরকার যেন দ্রুত আমার স্বামীর লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও নিহত জামালের চাচাতো ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, জামাল তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। ভাইয়েরা পৃথক পৃথক সংসার করছেন। পরিবারটি খুবই খুবই দরিদ্র হওয়ায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। একইভাবে শোকের মাতম চলছে নিহত অপর দুইজন ইমদাদুল হক ও আল আমিনের পরিবারেও। দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না তারা। পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে সৌদী আরব পাঠাতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হওয়া পরিবারগুলো চরম অনিশ্চয়তার মদ্যে পড়েছে। সন্তান হারানোর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন স্বজনেরা। একদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারানো অপরদিকে ঋণের বোঝা যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় ফেলেছে তাদের।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকালে রিয়াদ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে শাকরায় ১৭ জন বাংলাদেশিকে বহনকারী একটি মিনিবাস চাকা ফেটে উল্টে যায়। এতে নরসিংদী, নওগাঁ, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার ১০ প্রবাসী নিহত হন। তারা সবাই আল হাবিব কোম্পানি ফর ট্রেডিং কর্মাশিয়াল কন্সস্ট্রাকশন নামে একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।