জুমবাংলা ডেস্ক : জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং ছোট প্রকল্পের ক্ষেত্রে দরপত্রের পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ না থাকায় লোকসানের আশঙ্কায় কাজ বন্ধ করেছেন ঠিকাদাররা। এতে শুধু পিলার নির্মাণ করেই বিগত প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সাত কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুর নির্মাণকাজ। এতে কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল ঘরে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের চরকুড়ুলিয়ার নজরুলের ঘাট এলাকার অন্তত আটটি গ্রামের কয়েক শ কৃষক। সেতুটির অভাবে যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে অন্তত ১০-১৫ হাজার মানুষের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের চরকুড়ুলিয়া, কামালপুর, শানিকদাইড়, চরগড়গড়ি, কামালপুর, আলহাজমোড়সহ অন্তত আটটি এলাকার কয়েক শ কৃষক পদ্মা নদীর উপশাখা নদীর নজরুলের ঘাট পার হয়ে চর কুড়ুলিয়ার চরমাদিরারচরসহ সরকারি কয়েক হাজার খাসজমিতে ফসল চাষ করতে যান। এই ঘাট পারাপারে সারা বছরই সমস্যা লেগে থাকে। এসব সমস্যা দূর করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার ব্রিজ প্রকল্পের অধীনে নজরুলের ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সাত কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পান যশোর জেলার আইসিএল প্রাইভেট লি. অ্যান্ড এনএম (জেভি) স্বত্বাধিকারী তৌফিকুল ইসলাম।
এই ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজটি সাব ঠিকাদারি নেন ঢাকার জয়, কালু, নুরুজ্জামান খোকন, বেড়ার ফুল মিয়াসহ কয়েকজন ঠিকাদার।
ঈশ্বরদী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীকুণ্ডার চরকুড়ুলিয়ার পদ্মা নদীর উপশাখার নজরুলের ঘাটে সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২১ সালে শুরু করা হয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর। কিন্তু পিলারগুলো নির্মাণ করার পরই বাজারে অস্বাভাবিকভাবে রড, সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যায়।
তখন ঠিকাদাররা কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেন ঠিকাদাররা। পরে চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে কাজ শুরু করবেন বলে ঠিকাদার ফুল মিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়। সে ঘটনার পর এক মাস পার হলেও কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ তরিকুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, এ অঞ্চলের কয়েক শ কৃষকসহ অন্তত ১০-১৫ হাজার মানুষ এই ঘাট দিয়ে চলাচল করে।
শুকনা ও বর্ষা মৌসুমে চলাচল করতে ও মাঠ থেকে ফসল আনতে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কাজটির সাব ঠিকাদার ফুল মিয়া জানান, বৈশ্বিক করোনা মহামারিসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। তাঁদের মতো সারা দেশেই ছোট ছোট ঠিকাদাররা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারি লাইসেন্স ঠিক রাখতে প্রচুর টাকা লোকসান হবে জেনেও সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করতে খুব শিগগির কাজ শুরু করা হবে। এ জন্য বিভিন্ন মালামাল নির্মাণ সাইটে সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ এনামুল কবির জানান, ‘জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে চাপ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কাজ শেষ করার জন্য গত এক মাস আগে কাজের সাইটে শাটারিং পাইপ ফেলেছে। কিন্তু কাজটি এখনো শুরু করেননি। দ্রুত কাজটি শুরু করে শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মণ্ডল জানান, সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুরু না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।