জুমবাংলা ডেস্ক : বুধবার থেকে বিকাশের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো বেসরকারি খাতে সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ সেবা চালু হয়। সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
সেবাটি চালুর ৩১ ঘণ্টার মধ্যে বিকাশের ৮৫৭ গ্রাহককে ঋণ দিয়েছে ব্যাংকটি। বিতরণ করা ঋণের অঙ্ক ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা। উদ্বোধনের ৩১ ঘণ্টায় (বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা) এই ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি।
ঋণ পেতে বিকাশ গ্রাহকদের কোথাও যেতে হয়নি। এমনকি কোনো নথিতেও সই করতে হয়নি, দিতে হয়নি জামানত। সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের এক ক্লিকে এ ঋণ পাচ্ছেন গ্রাহকরা। এর মধ্যে দিয়ে ডিজিটাল ঋণের যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ।
ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংকের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম প্রধান মির্জা গোলাম ইয়াহিয়া বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, ‘বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাট ৭টা পর্যন্ত ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। ঋণ পেয়েছেন মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) বিকাশের ৮৫৭ গ্রাহক। গড় ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৭৬৬ টাকা।’
শুরুতে বিকাশের সব গ্রাহক এ ঋণ পাচ্ছেন না। কারণ, সিটি ব্যাংক এ ঋণ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে গ্রাহকের কিছু যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে। এ জন্য বিকাশের অনেক গ্রাহক ঋণের চেষ্টা করেও পাচ্ছেন না।
যারা ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের বিকাশের অ্যাপে দেখানো হচ্ছে, ‘দুঃখিত… আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদানের নীতিমালা অনুযায়ী আপনার বিকাশ হিসাব এখনো ঋণসেবার জন্য উপযুক্ত নয়।’
বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তথ্য সরবরাহ করে (ই-কেওয়াইসি) যেসব গ্রাহক বিকাশ হিসাব খুলেছেন, তারাই শুরুতে ডিজিটাল ঋণ পাচ্ছেন। পাশাপাশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে নিয়মিত লেনদেনকারীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিকাশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রচলিত পদ্ধতিতে কেওয়াইসিতে যারা গ্রাহক হয়েছেন, তাদের জন্য ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে পুনরায় নিবন্ধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিকাশ। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে আরও গ্রাহক ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন।
‘প্রচলিত পদ্ধতিতে যারা গ্রাহক হয়েছেন, তাদেরও ঋণের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা বলছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে যারা গ্রাহক হয়েছেন, তারাই শুধু ঋণ পাবেন।
আর সিটি ব্যাংকের ভাষ্য, ঋণ পেতে গ্রাহককে দীর্ঘদিন বিকাশ অ্যাপস ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু বিকাশের লেনদেন পর্যালোচনা করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ধারণ করে দিচ্ছে কারা ঋণ পাবেন, তাই গ্রাহক যত বেশি বিকাশে লেনদেন করবেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তারাই অগ্রাধিকার পাবেন।
নানা মানদণ্ড বিবেচনায় যোগ্য গ্রাহকদের ৯ শতাংশ সুদে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। এর মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৩ মাস। তিনটি মাসিক কিস্তিতে বিকাশ অ্যাপ থেকেই ঋণ পরিশোধ করা যাবে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন সেবা চালু থাকলেও, এতদিন ঋণ নেয়ার সুযোগ ছিল না। বছরজুড়ে পাইলট প্রকল্প সফলভাবে শেষ হলে, প্রথমবারের মতো দেশে জামানতহীন ইনস্ট্যান্ট ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ’ নামের এই সেবা চালু করে সিটি ব্যাংক।
রাজধানীর একটি হোটেলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বুধবার এই সেবার উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের ও সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার।
জানানো হয়, এই ঋণে দৈনিক হারে সুদহার নির্ধারিত হবে। ফলে একজন গ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাকে কেবল সে’কদিনের সুদ দিতে হবে। অগ্রিম নিষ্পত্তির জন্য নেই বাড়তি খরচ। নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দেবে সিটি ব্যাংক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।