জুমবাংলা ডেস্ক : ৩২ মাস হাসপাতালে থাকার পর অবশেষে ঘরে ফিরল কুড়িগ্রামের জোড়া শিশু নুহা ও নাবা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ দফা অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার পর মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাড়িতে ফিরে যান তারা। শিশু দুটোর চঞ্চলতায় মুখর হয়ে উঠেছে বাড়ির আঙিনা। তা দেখে খুশি আলমগীর-নাসরিন দম্পতি।
তবে পরবর্তী চিকিৎসা ও কর্মসংস্থান নিয়ে এখনো শঙ্কা কাটেনি তাদের।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের আলমগীর-নাসরিন দম্পতি। ২০২১ সালের ২২ মার্চ কুড়িগ্রামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে জোড়া লাগানো দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো যমজ দুই কন্যাকে পেয়ে আনন্দের বদলে বিষাদ ভরে যায় এই দম্পতির মন।
অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করার জন্য যেতে পারছিলেন না কোনো হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে। এ অবস্থায় ওই বছরের ৪ এপ্রিল সিভিল সার্জন অফিসের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় শিশু দুটিকে।
এই জোড়া শিশুদের পৃথক করাসহ চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় সরকার। নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ হোসেনের তত্ত্বাবধানে ৮ দফা অস্ত্রোপচারের পর গত বছর জানুয়ারি মাসে পৃথক করা হয় শিশু দুটিকে।
দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে যা মাইলফলক হয়ে যায়। এর পর থেকে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল তাদের।
অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা শেষে সোমবার রাতে হাসপাতাল ত্যাগ করে জোড়া শিশু নুহা ও নাবা। তাদের এই অকল্পনীয় চিকিৎসা নিয়ে স্বস্তি ও আনন্দ এখন আলমগীর নাসরিন দম্পতির মনে।
মা নাসরিন বেগম জানান, জন্মের পর মেরুদণ্ডে জোড়া দেখে তারা অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যয় মেটানো তাদের পক্ষে সম্ভবও ছিল না। কিন্তু সরকার ও অন্যান্য মানবদরদি ব্যক্তিরা এগিয়ে এসে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। বিশেষ করে ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অবদান ভুলে যাওয়ার মতো নয়। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ও অন্যান্য সহায়তা করে গেছেন।
পিতা আলমগীর হোসেন চিকিৎসায় সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘সরকারি সহায়তা ছাড়াও চিকিৎসা করে একমাত্র জমি বিক্রি ও অন্যান্য সহায়তা মিলে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আমি বেকার। মাসে ১৫ হাজার টাকার চিকিৎসা খরচ লাগবে। সব মিলে জীবন-জীবিকা ও চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।