জুমবাংলা ডেস্ক : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ৩৪ বছর বয়সে মুসলমানি (সুন্নতে খতনা) করলেন বেলাল হোসেন নামের এক যুবক। অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন উপজেলার জিগাতলা গ্রামের মো. আব্দুল আজিজের ছেলে বেলাল হোসেন। গত ৬ জানুয়ারি সকালে টাঙ্গাইল ক্লিনিকে অপারেশন মাধ্যমে এ সুন্নতে খতনা সম্পন্ন করেন তিনি। টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. গোলাম মোস্তাফা মিয়ার তত্ত্বাবধানে সুন্নতে খতনা সম্পন্ন হয়।
জানা গেছে, জন্মগতভাবে বেলাল হোসেনের পু রু ষা ঙ্গে র একপাশে কাটা ছিল। সবাই বলত খোদার মুসলমানি হয়েছে। তাই আর মুসলমানি (সুন্নতে খতনা) করানো হয়নি বেল্লালের। তাদের ধারণা ছিল তাকে আর সুন্নতে খতনা করতে হবে না। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর যখন বেলালের বিয়ের বয়স হলো তখন নানা মহল থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপবাদ আসতে লাগল। তার বিয়ে উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে এলাকায় খোঁজখবর নিতে আসলে ছেলের বিরুদ্ধে এলাকার কিছু লোক বদনাম ও অপবাদ দিয়ে বিয়ে ভেঙে দিত বলে জানায় বেলাল হোসেন। তারপর ২০১৮ সালের জুন মাসে তিনি বিয়ে করেন। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর সংসার করার পর ২০২১ সালের জুন মাসে তাদের ডিভোর্স হয়। পরবর্তীতে বিয়ে করতে চাইলে তার একই সমস্যা দেখা দেয়। তাই এলাকার মানুষের অপবাদ ও বদনামের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিয়ের ৩ বছর পর ৩৪ বছরে মুসলমানি (সুন্নতে খতনা) করেন বেলাল হোসেন।
বেলাল হোসেনের পিতা মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ছোটকালেই বেলালের খোদার মুসলমানি হয়েছে। তাই তাকে আর মুসলমানি (সুন্নতে খাতনা) করানো হয়নি। কয়েক বছর আগে সে একটি বিয়ে করেন কিন্তু তিন বছর সংসার করার পর তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। অনেকেই ধারণা করছেন, হয়তো সুন্নতে খতনা না করার কারণেই এমন ঘটনা হয়েছে। তাই বেলাল কয়েকদিন আগে নিজেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে সুন্নতে খাতনা করিয়েছে।
বেলাল হোসেন বলেন, আমি যতটুকু জানি খতনা করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। শারীরিকভাবে শক্ত-সামর্থ্যবান হওয়ার পরই সুবিধাজনক সময় ছেলের খতনা করিয়ে দেওয়া অভিভাবকের দায়িত্ব। আমি ছোটকাল থেকে দেখছি সবাই মুসলমানি করছে কিন্তু আমি করছি না কেন? অভিভাবকদের প্রশ্ন করলে আমাকে বলতো তোমার মুসলমানি হয়েছে। তোমাকে আর সুন্নতে খতনা করতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের জুন মাসের ১৮ তারিখে আমার একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়। দীর্ঘ তিন বছর সংসার করার পর কোনো কারণে ২০২১ সালের জুন মাসের ২৬ তারিখে আমাদের ডিভোর্স হয়।
ডিভোর্সের পর বাবা-মা আমাকে বিয়ে করানোর অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কনে পক্ষ আমাদের এলাকায় খোঁজখবর নিতে আসলে অনেকে তাদের কাছে বলতো ছেলের সমস্যা আছে। অনেক সময় বিয়ে প্রায় ঠিক, এমন সময় প্রিয়জনেরা কনে পক্ষের কাছে নানা রকম সমস্যার কথা ও বদনাম করলে বিয়ে বন্ধ হয়ে যেত। আর কেউ যেন আমার সম্পর্কে বদনাম না করতে পারে সেজন্য গত (৬ জানুয়ারি) সকালে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. গোলাম মোস্তাফা মিয়ার তত্ত্বাবধানে সুন্নতে খতনা করেছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।