জুমবাংলা ডেস্ক : বাইসাইকেলে করে ৩৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিযে সাভার থেকে বরগুনা এসেছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক যুবক। করোনার উপসর্গ থাকায় ওই যুবককে ঘরে উঠতে দেননি তার স্ত্রী। তিনি শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেওয়ায় ওই বাড়িসহ দুটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাভারের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন ওই যুবক। গত ৫ এপ্রিল তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়। স্বজনরা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন। কিন্তু তিনি চিকিৎসকের কাছে যাননি। ৭ এপ্রিল সাভারের স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাইসাইকেল নিয়ে বরগুনার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। অসুস্থ্ শরীরে টানা তিন দিন সাইকেল চালিয়ে ১০ এপ্রিল বরগুনা সদর উপজেলায় নিজ বাড়িতে পৌঁছান তিনি।
ওই যুবকের প্রতিবেশী এক দম্পতি বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় তার বাড়ি আসার খবর জানতে পারি ১১ এপ্রিল বিকেলে। মূলত ঢাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরার চেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় ছিল তিন দিন ধরে সাইকেল চালিয়ে তার বরগুনায় আসার খবর। প্রথম দুই দিন তিনি তার শ্বশুরের ঘরে ছিলেন। বাইরে বের হননি। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ১২ এপ্রিল পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়। ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তার রিপোর্ট আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। রিপোর্টে ওই যুবক করোনা পজিটিভ বলে জানানো হয়।
ওই যুবকের বাবা বলেন, ‘৭ এপ্রিল সকালে বৌমার মাধ্যমে আমার ছেলের অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি রওনা করার খবর জানতে পারি। ফোনে কল করে তাকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করি। কিন্তু সে তা শোনেনি। তিন দিন সাইকেল চালিয়ে ১০ এপ্রিল বিকেলের দিকে আমার ছেলে বাড়িতে আসে। বৌমা আমার ছেলেকে ঘরে উঠতে দেয়নি। তাই সে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখানে সে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর জানতে পারি, আমার ছেলের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।’
করোনায় আক্রান্ত ওই যুবকের স্ত্রী বলেন, ‘তাকে আমি বরগুনা আসতেই নিষেধ করেছিলাম। তাকে আমি সাভারে ডাক্তার দেখাতে বলেছিলম। কিন্তু সে তা শোনেনি। বরগুনা আসার পরও তাকে আমি বাড়িতে আসতে নিষেধ করে হাসপাতাল যেতে বলি। কিন্তু সে আমার কোনো কথাই শোনেনি। তাই তাকে আমি ঘরে উঠতে দেইনি।’
বরগুনার সিভিল সার্জন বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই যুবক এখন ভালো আছেন। আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক তার সেবা দিচ্ছেন।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাইকেল চালিয়ে ওই যুবক ঢাকা থেকে বরগুনা এসেছেন, তা আমি অবগত আছি। ঢাকা থেকে এসে ওই যুবক নিজ বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন। এজন্য তার শ্বশুরবাড়ি ও এক শ্যালকের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।