জুমবাংলা ডেস্ক: লালমনিরহাট সদর উপজেলার হাড়িভাঙা এলাকার দার্জিলিং ও চায়না কমলার ব্যাপক চাষ হচ্ছে। গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে রোদের ঝিলিমিলি আলোতে চকচক করছে কমলা। বাগানটি দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড়। প্রায় ৬২ একর সমতল জমিতে কমলা ও মাল্টা বাগান করে তাক লাগিয়েছেন উদ্যোক্তা একরামুল হক। তার সফলতা দেখে এলাকায় অনেক বেকার যুবক অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তারাও বিভিন্ন ফলের বাগান করায় আগ্রহী হয়েছেন।
জানা যায়, মাত্র ৩ বছরেই কমলা ও মাল্টা চাষে তিনি ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে তার বাগান রয়েছে। কুড়িগ্রামে প্রথম কমলার চাষ শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে তা বড় করতে থাকেন। বর্তমানে তার তিন জেলার বাগানে প্রায় ৭০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। প্রায় কোটি টাকার ফল উৎপাদন করে তাক লাগিয়েছেন তিনি। একদিকে নিজের সাফল্য অপর দিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে অনেকের জীবন জীবিকার সুযোগ করেছেন। তার বাগানের মাধ্যমে দেশে স্বল্পমূল্যে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হচ্ছে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে জেলার কমলা ও মাল্টার চাহিদা মিটিয়ে রংপুর বিভাগ ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব মাল্টা ও কমলা বিক্রি হচ্ছে।
বাগানি একরামুল হক বলেন, গাছের প্রতি আমার অনেক ভালোবাসা রয়েছে। শুরুতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে লোকসানও গুনতে হয়েছে। তারপর নার্সারি ব্যবসা শুরু করি। এক পর্যায়ে জমি লিজ নিয়ে ফলের বাগান শুরু করি। লালমনিরহাটে ৪ একর জমি লিজ নিয়ে ২ হাজার মাল্টা ও ৫০০ কমলার চারা রোপন করি। প্রায় ৩ বছরের সময় গাছে ফল আসায় সেখান থেকে প্রায় ৭০ লাখের বেশি টাকা আয় হয়।
তিনি আরো বলেন, তারপর কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারীর বিভিন্নস্থানে ৫৫ একর জায়গা জুড়ে ফল বাগান গড়ে তুলেছি। সেখানে কয়েক প্রজাতির কমলা, মাল্টা, ড্রাগনসহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, তার শুরুটা কষ্টের হলেও তা ধীরে ধীরে লাঘব হতে থাকে। শুরুতে গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক লোকসান হয়। তারপরেও তিনি হাল না ছেড়ে চেষ্টা চালিয়ে যান। বর্তমানে তিনি রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে কমলা ও মালটা চাষ শুরু করেছেন। তার চিন্তা রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় কৃষকদের কমলা চাষ করা শেখাবেন। এতে মানুস তামাক ছেড়ে ফল চাষে আগ্রহী হবেন।
স্থানীয় এক শিক্ষক মশিউর রহমান জানান, পরিত্যক্ত জমিতে কমলা চাষ করে সত্যিই একরামুল হক তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তরুণ সমাজকে নতুন কিছু শেখাবেন। বর্তমানে লালমনিরহাটে বিষবৃক্ষ তামাক চাষ বেশি হচ্ছে। এসব চাষ বাদ দিয়ে কমলাসহ বিভিন্ন ফলজ ও চারা চাষ করছেন। যেটি সত্যিই আমাদের জন্য আনন্দের। একরামুলের মতো জেলার আদিতমারী, হাতিবান্ধা, পাটগ্রামেও গড়ে উঠেছে মালটা ও কমলা বাগান। দৃষ্টিনন্দন বাগানগুলোতে ফুসরত পেলেই পরিবারসহ ঘুরতে আসছেন অনেকেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, এই জেলার মাটি দেশি ও বিদেশি সবধরনের ফল চাষের উপযোগী। আর গত দুই বছর যাবত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন জাতের ফলের চাষ হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যেক্তা। দেশে ফলের চাষ দিন দিন বাড়ছে। আমাদের আর আমদানি নির্ভর হতে হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।