জুমবাংলা ডেস্ক : পোশাক শ্রমিক কুলসুমের সঙ্গে পরকীয়া ছিল গাড়ি চালক এনামুলের। সেই তথ্য জেনে যায় প্রতিবেশী কালু ও কাসেম। পরকীয়ার তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারা কুলসুমকে কু-প্রস্তাব দেয়। কুলসুম এতে রাজি না হওয়ায় তিনজনে মিলে হত্যার পর মৃতদেহ গুমের উদ্দেশ্যে দুই টুকরা করে দুই জায়গায় ফেলে দেয়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে পোশাক শ্রমিক কুলসুম হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি কালু মিয়া ও আবুল কাসেম।
শুক্রবার পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাশেম ও কালুকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা। এরপর তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজন এনামুলের সঙ্গে মিলে কুলসুমকে খুন করার কথা স্বীকার করেন।
ডিবির পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান একটি গণমাধ্যমকে বলেন, দুই আসামিকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পলাতক এনামুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
২০১৭ সালের ২২ মার্চ রাজধানীর খিলক্ষেত টানপাড়া এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে পরিচয়হীন এক নারীর মাথাবিহীন বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের হাত পা গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। দীর্ঘ তদন্তের একপর্যায়ে প্রথমে লাশের পায়ের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপর লাশের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত গাড়ি চালক এনামুলকে শনাক্ত করা হয়। যদিও এনামুল শনাক্ত হওয়ার আগেই সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। পরে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায়।
কুলসুম সপরিবারে পল্লবীর ইলিয়াস মোল্লার বস্তিতে থাকতেন। তার দুই সন্তান রয়েছে। স্বামী একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এই হত্যার ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়। থানা-পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কুল কিনারা করতে না পারায় মামলা তদন্তের ভার ডিবির কাছে ন্যস্ত হয়।
ডিবি পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট অপর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, কুলসুমকে ধর্ষণের পরিকল্পনায় ছিল এনামুল, কাসেম ও কালু। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এনামুল ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে কালু ও কাসেমের হাতে কুলসুমকে তুলে দেওয়ার জন্য কৌশলে ডেকে আনে। ঘটনার দিন সকালে এনামুল অসুস্থতার ভান ধরে কুলসুমকে বাসায় ডেকে এনে ধর্ষণ করে। এ সময় কালু ও কাসেম দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়ে তারাও কুলসুমকে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালায়। তখন কুলসুম চিৎকার করার চেষ্টা করলে কালু ও কাসেম গামছা দিয়ে মুখ চেপে ধরে। এতে শ্বাসরোধ হয়ে কুলসুম মারা যায়। এরপর এনামুল, কালু ও কাসেম কুলসুমের মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে বটি দিয়ে কেটে দুই টুকরা করে। মাথা ও বটি এক বস্তায় ভরে কাসেম ও কালু মিরপুর ১২ নম্বরের রাস্তার একটি ম্যানহোলে ফেলে দেয়। এনামুল অপর একটি বস্তায় মরদেহের বাকি অংশ ভরে খিলক্ষেতের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।