জুমবাংলা ডেস্ক : ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে উন্মাদনা এখন তুঙ্গে। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে গ্রামের চায়ের দোকান- সর্বত্র বিশ্বকাপের আমেজ। যদিও বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে খেলছে না। তবে ফুটবলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল বাংলাদেশি ফুটবল ভক্তদের তরতাজা রেখেছে। দুদিন পরই শুরু হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। সারাবিশ্বের সঙ্গে এক মাসের এই রোমাঞ্চের জন্য অধির আগ্রহে রয়েছেন বাংলাদেশি সমর্থকরাও।
ফুটবল উন্মাদনায় কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামের আদলে মাসুদুর রহমান নামে এক আর্জেন্টিনা সমর্থক ফরিদপুরে আটটি স্টেডিয়াম তৈরি করেছেন।
ফরিদপুর পৌর এলাকার ভাজনডাঙ্গায় টিবি হাসপাতালের পাশে একটি মাঠে এসব স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের খেলাগুলো যে আট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে, সে আদলে তৈরি করা হয়েছে স্টেডিয়ামগুলো।
দীর্ঘ ১০ বছর কাতারে থেকেছেন মাসুদুর রহমান। কাতারে থাকার কারণে বিশ্বকাপের খেলাগুলো যেসব স্টেডিয়ামে হবে, সে স্টেডিয়ামগুলোতে তিনি গিয়েছেন এবং দেখেছেন। সে থেকেই তার চিন্তা গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে একই রকম স্টেডিয়াম তৈরি করবেন।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, দেড় মাস আগে দেশে আসেন এবং নিজস্ব অর্থায়নে স্থানীয় তরুণদের সঙ্গে নিয়ে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু করেন মাসুদুর রহমান। একইসঙ্গে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২ দলের পতাকা থাকছে মাঠে। খেলা চলাকালীন বড় পর্দায় দেখানো হবে সেসব খেলা। এছাড়া অন্য এলাকা থেকে যারা দেখতে আসবেন তাদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
কাতারে যে আট স্টেডিয়ামে খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হলো- আল থোমামা (টুপির মতো আকৃতি), মদিনা খলিফা (পালতোলা নৌকা আকৃতি), নাইন সেভেন ফোর (সমুদ্রের পাড়ে), আল বাইয়াত (দূরে অবস্থিত), আল রাইয়ান (জাহাজের মতো), লুসাইল (বাটির মতো), আল জয়নু (শামুক) ও এডুকেশন সিটি। এর আদলেই ফরিদপুরের স্টেডিয়ামগুলো তৈরি করা হয়েছে। এগুলো তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ, বাঁশ, পাঠখড়ি, পিভিসিসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
মাসুদুর রহমান জানান, প্রথমে স্টেডিয়ামগুলোর নকশা জোগাড় করি। এরপর ভালোভাবে পর্যালোচনা করি। তারপর সিদ্ধান্ত নিই বাংলাদেশে আসবো। মনে হলো নিজে কাতারের মাঠে বিশ্বকাপ খেলা না দেখে এরকম কিছু করি; যাতে দেশের মানুষ সেখানে বসে খেলা দেখবে আর ভাববে কাতারের মাঠে বসেই খেলা দেখছি। দেড় মাস আগে কাতার থেকে দেশে আসি। এরপর বাড়ির পাশে ভাজনডাঙ্গা এলাকায় টিবি হাসপাতালের সামনের মাঠে স্থানীয় তরুণদের সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, “আমি আর্জেন্টিনা সমর্থক। মেসি আমার প্রিয় খেলোয়াড়। মেসির খেলা সবাই যেন এই ব্যতিক্রমী মাঠে দেখতে পায় সেজন্য আমার এই আয়োজন। কাতারে যে ডিজাইনে আট স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে এখানেও সেই আদলে তৈরি করা হয়েছে। আল থোমামা স্টেডিয়াম কাতারে টুপির আকৃতিতে করা হয়েছে, এখানেও আমি চেষ্টা করেছি সেভাবে তৈরি করতে। নাইন সেভেন ফোর স্টেডিয়ামটি সমুদ্রের পাড়ে নির্মাণ করা হয়েছে, আমি এখানে একটি পুকুর পাড়ে নির্মাণ করেছি। কোনোটি জাহাজের মতো, কোনোটি বাটির মতো আবার শামুকের মতো করে তৈরি করা হয়েছে। এগুলো তৈরি করতে বাঁশ, কাঠ, পাঠখড়ি ও পিভিসিসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করেছি। এই কর্মযজ্ঞে আমার সঙ্গে ২০-২৫ জন তরুণ রয়েছেন। প্রতিদিন ১৬-১৮ ঘণ্টা করে কাজ করতে হয়েছে। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।”
প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে এগুলো তৈরি করেছেন তিনি। এছাড়া প্রতিটি খেলা বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করেছেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে যারা আসবেন তাদের জন্য মাঠের পাশেই বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করেছেন।
তিনি জানান, মাঠের চার পাশে ৩২ দলের পতাকা উড়ানো থাকবে। কাতারে খেলা দেখতে গিয়ে মানুষ যে ধরনের সুবিধা পাবে ঠিক এখানেও সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া উদ্বোধনী দিনে মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।