জুমবাংলা ডেস্ক: নিজের ৭০ বছর বয়সে টানা ৭০ ঘন্টায় ২৮৫ কিলোমিটার সাঁতার কেটে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়তে চান বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য।
আজ (২৭ আগস্ট) সিলেট নগরীর মেন্দিবাগস্থ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ড আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য জানান, সোমবার (২৯ আগস্ট) সকাল ৬টায় সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী চাঁদনিঘাট থেকে তিনি সাঁতার শুরু করবেন। নদীপথে টানা ২৮৫ কিলোমিটার সাঁতরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ফেরিঘাটে পৌঁছাতে প্রায় ৭০ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। তার এ যাত্রায় তিনি সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ এই চার জেলার আংশিক বা সম্পূর্ণ অতিক্রম করবেন।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে চার জেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। তার এ যাত্রাপথে স্ব স্ব জেলার পুলিশ প্রশাসন, নৌ-পুলিশসহ সিভিল সার্জনের একাধিক টিম সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। পানিতে অবস্থানকালীন তার যাতে শারীরিক বা স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা না হয় বা হলেও যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়; সে ব্যাপারে সবাই সর্বোচ্চ সতর্কতায় কাজ করবেন।
তার এই সাঁতারে সার্বিক সহযোগীতা করছে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সংবাদ সম্মেলনে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ উদ্দিন আহমদ, রজনীকান্ত দাশ, রাকেশ সরকার, প্রীতি কুসুম চৌধুরী, অমলেন্দু দাশ, পান্না লাল রায় ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ড নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য বলেন, ‘আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। ২০১২ সালের মে মাসে অবসর গ্রহণ করলেও এখনো কনসালট্যান্ট হিসেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অধিনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করছি। ছাত্রজীবন থেকে সাঁতার আমার নেশা। আমি একজন অবিরাম শৌখিন সাঁতারু। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটানা ৯৩ ঘন্টা ১১ মিনিট এবং ১৯৭৬ সালে ১০৮ ঘন্টা ৫ মিনিট অবিরাম সাঁতার কেটে জাতীয় রেকর্ড সৃষ্টি করি।’
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ১৮৫ কি. মি দূরপাল্লার সাঁতার কাটেন যা ছিল আরেকটি স্থানীয় রেকর্ড। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটানা ৯৩ ঘন্টা ১১ মিনিট সাঁতার কেটে রেকর্ড করায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে রূপার নৌকা দিয়ে সম্মানিত করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭০ সাল থেকেই আমি দূরপাল্লার বা অবিরাম সাঁতারের সঙ্গে জড়িত। সেবার নিজের থানা নেত্রকোনার মদনে টানা ১৫ ঘন্টা সাঁতার কেটেছিলাম। তারপর একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। ১৯৭৩ সালে সিলেটের এমসি কলেজের পুকুরে টানা ৮২ ঘন্টা সাঁতার কেটেছিলাম।’
এছাড়াও সিলেট নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন পুকুর, ধোপাদিঘীতে, সুনামগঞ্জ এবং ছাতকেও তিনি দীর্ঘসময় অবিরাম সাঁতার কেটেছেন বলে জানান তিনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৯ সালে একুশে পদক পাওয়া এই শৌখিন সাঁতারুর এবারের লক্ষ্য ২৮৫ কি. মি সাঁতার কাটা। যদি এতে তিনি সফল হন তাহলে বয়স্ক সাঁতারু হিসেবে এটা একটা বিশ্বরেকর্ড হবে যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক একটা ব্যাপার হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
এজন্য তিনি সকল মহলের দোয়া কামনা করে তিনি তার এই সাঁতারের বিষয়টি প্রচারে গণমাধ্যম কর্মীদেরও সহযোগিতা কামনা করেন।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।