বাংলাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করো’না আ’ক্রান্তের সংখ্যা, সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃ’তের সংখ্যা। আর তাই জনমনে প্রশ্ন উঠছে যে, বাংলাদেশ কি করো’নার পিক সময়ে প্রবেশ করেছে, নাকি পিক সময় এখনো বাকি।
যে সমস্ত দেশে করো’নার ব্যা’পক বিস্তৃতি হয়েছে, সেই সমস্ত দেশগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রো’গী শনা’ক্তের সংখ্যা এবং মৃ’তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে একটি চুড়ান্ত স্থানে উপনিত হয় এবং সেখান থেকে আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং এক এক দেশের প্যাটার্ন একেক রকম।
আম’রা যদি দেখি যে, সাম্প্রতিককালে ইতালি, স্পেন, যু’ক্তরাষ্ট্র এবং যু’ক্তরাজ্যের হিসেব পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, ৬০ থেকে ৬৬ তম দিনে গিয়ে ঐ সমস্ত দেশগুলোতে করো’না প’রিস্থিতি ভ’য়াবহ আ’কার ধারণ করেছিল। বাংলাদেশ প্রথম করো’না রো’গী শনা’ক্ত হয়েছিল ৮ মা’র্চ, সেই হিসেবে ৭ মে বাংলাদেশে করো’নার ৬০তম দিন পূর্ণ হবে। এই ৬০তম দিন পর্যন্তই বাংলাদেশের জন্য ঝুঁ’কি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই বাংলাদেশের প’রিস্থিতি কতদিনে ভ’য়াবহ হবে বা কতদিনে কমতে শুরু করবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশে প্রথম করো’না রো’গী শনা’ক্ত হয়েছিল ৮ই মা’র্চ এবং তারপর থেকে ৩৭ দিন পর (১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত) ১ হাজার রো’গী শনা’ক্ত করা হয়েছে। আর তাঁর বিপরীতে মাত্র ৪ দিনে, অর্থাৎ ১৮ই এপ্রিলে আরো নতুন করে ১ হাজার রো’গী শনা’ক্ত হয়েছিল। অর্থাৎ এখন বাংলাদেশে করো’না আ’ক্রান্ত রো’গীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে।
অবশ্য বিশেষজ্ঞরা এটা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ ক’রেছেন। তাঁরা বলছেন যে, প্রথম ৩৭ দিনে শনা’ক্তের সংখ্যা কম থাকার কারণ ছিল পরীক্ষার সীমাবদ্ধতা, তখন পরীক্ষা হয়েছিল খুবই সীমিত আ’কারে। যখন পরীক্ষার হার বাড়ানো হয়েছে, তখন শনা’ক্তের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এবং এটা থেকে বোঝার উপায় নেই যে বাংলাদেশ করো’নার পিক সিজনে প্রবেশ করেছে কিনা। তবে প্রধানমন্ত্রীর ব্য’ক্তিগত চিকি’ৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এবিএম আবদুল্লাহ মনে করেন যে করো’নার পিকে পৌঁছেছে।
আগামী কয়েকদিনের ভেতর এটা কমতে শুরু করবে এবং তাঁর হিসেব মতে ৪০-৫০ তম দিনের মধ্যে করো’নার পিক সিজন চলবে এবং এরপরে কমতে শুরু করবে। সেই হিসেব করলে দেখা যায় যে, আজ করো’নার সংক্র’মণ ের ৪৩তম দিন অ’তিবাহিত হচ্ছে এবং এই বিবেচনা থেকে আর দুই-তিনদিন পর এই সংক্র’মণ ের হার কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ডা. এবিএম আবদুল্লাহ মনে করেন যে এটা কমতে থাকলেও এর সামাজিক সংক্র’মণ ঠেকানোর জন্য আরো কিছুদিন সবকিছু ব’ন্ধ থাকা প্রয়োজন। কারণ সামাজিক সংক্র’মণ ছ’ড়িয়ে পড়লে নতুন করে করো’না আ’ক্রমণ ক’রতে পারে। আবার কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, যেহেতু বাংলাদেশে সামাজিক সংক্র’মণ ছ’ড়িয়ে প’ড়েছে। কাজেই ৮ই মা’র্চ যদি আম’রা সূচণা দিন ধ’রি, তাহলে ৭ই মে পর্যন্ত আমাদের সংক্র’মণ ের আশ’ঙ্কা রয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে পিক সিজন শুরু হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন যে, কয়েকটি কারণে সামাজিক সংক্র’মণ ছ’ড়িয়ে পড়ার আশ’ঙ্কা তৈরি হয়েছে। আম’রা যে সামাজিক বি’চ্ছিন্নতা এবং সামাজিক দুরত্ব নি’শ্চিতের আকাঙ্ক্ষা থেকে যে ১ মাসের ছুটি দেয়া হয়েছিল, সেই সামাজিক বি’চ্ছিন্নতা এবং সামাজিক দুরত্ব পুরোপুরি পালিত হয়নি। বিশেষ করে এখনো হাট-বাজারগুলোতে মানুষের অবাধ মে’লামেশা এবং সামাজিক দুরত্ব না মানা, ব্যাংক খোলা রাখা এবং মানুষের কারণে-অকারণে ঘর থেকে বের হিবার প্র’বণতার কারণে সামাজিক দুরত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে দেয়া সাধারণ ছুটি পুরোপুরি কা’র্যকর হয়নি। একই সাথে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জা’নাযা উপলক্ষ্যে লাখো মানুষের উপ’স্থিতি কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিকদের ভিড় জমিয়ে ঢাকায় ফেরা- ইত্যাদি কারণে সামাজিক দুরত্ব আম’রা পুরোপুরি পা’লন ক’রতে পারিনি।
আর এই কারণেই বাংলাদেশের জন্য ৪৫ দিন নয়, বরং ৬০ তম দিন পর্যন্ত আশ’ঙ্কা রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বোঝা যাবে বাংলাদেশের করো’না প’রিস্থিতি কি। বিশেষজ্ঞরা আরো মনে করছেন যে, এখন যেহেতু করো’না পরীক্ষার হার বাড়ান হয়েছে, কাজেই আরো ২ সপ্তাহ বাংলাদেশের জন্য গু’রুত্ব পূর্ণ। এই ২ সপ্তাহে বোঝা যাবে যে, বাংলাদেশে করো’না প’রিস্থিতি কতটুকু ভ’য়াবহ হয়েছে। আর সেজন্যেই বাংলাদেশের ভ’য় ৬০ তম দিন পর্যন্ত- এমনটাই মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



