আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাত বছর পর জুমার নামাজে ইমামতি করতে যাচ্ছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি। এর মাধ্যমে জাতি হিসেবে ইরান নিজেদের ‘একতাবদ্ধ অবস্থান’ প্রদর্শন করবে বলে জানানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় বার্তায়। এর আগে সর্বশেষ ২০১২ সালে খোমেনি জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) তেহরানে জুমার নামাজে ইমামতি করবেন খোমেনি। আনুষ্ঠানিকভাবে উল্লেখ না করলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানকে ঐক্যবদ্ধ করতেই খোমেনি জুমার নামাজের ইমামতি করবেন।
ইরানের বার্তা সংস্থা মেহের জানিয়েছে, তেহরানের মোসাল্লা মসজিদে ইমামতি করবেন ৮০ বছর বয়সী খোমেনি। কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, এর মাধ্যমে ‘ইরানি জাতির ফের একবার নিজেদের একতা ও সৌন্দর্য প্রকাশ করবে।’
এর আগে ২০১২ সালে দেশটির ইসলামিক বিপ্লবের ৩৩তম বার্ষিকীতে সর্বশেষ জুমার নামাজে ইমামতি করেছিলেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি।
ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের গবেষক মেহেদি খালাজি এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার জুমার নামাজে ইমামতি করার ঘটনাটি প্রতীকি হলেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণত ইরান কর্তৃপক্ষ যখন জাতির উদ্দেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোনো বার্তা দিতে চায়, তখনই দেশটির ধর্মীয় নেতা জুমার নামাজে ইমামতি করেন।
ইরানের নিক্ষেপ করা মিসাইলে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হলে দেশটিতে সরকারবিরোধী যে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খোমেনি। কেবল দেশের নাগরিকদের বিক্ষোভ নয়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে দেশটির অর্থনীতিও এখন চাপের মুখে রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে গত বুধবার দেশটিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসান রুহানি। তবে সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যে সম্পর্ক, তা থেকেও বেরিয়ে আসেন তিনি। হাসান রুহানি দেশটির সেনাবাহিনীকে বিমান বিধ্বস্ত করতে মিসাইল নিক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করতে বলেন।
গত ৮ জানুয়ারি ইরানের বিমানবন্দর থেকে ইউক্রেনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানটিতে আরোহী ১৭৬ জনের সবাই মারা যান। ‘কারিগরি ত্রুটি’র কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল বলে শুরুতে জানায় ইরানি কর্তৃপক্ষ।
একদিন পর ১০ জানুয়ারি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দাবি করেন, ইরানের ভূমি থেকে ছুঁড়া একটি মিসাইলের আঘাতে ভূপাতিত হয় যাত্রীবাহী বিমানটি। তার বক্তব্যের সমর্থনে ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করা হয়।
পরদিন ১১ জানুয়ারি নিজেদের প্রাথমিক বক্তব্য থেকে সরে আসে ইরান কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটিকে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে ‘ভুল করে’ ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ডসের সেনারা মিসাইল হামলা চালিয়েছে। ইরানের সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, যাত্রীবাহী বিমানে মিসাইল হামলা ইচ্ছাকৃত নয়। এটি মানবিক ভুল। যারা এজন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।