জুমবাংলা ডেস্ক: মাত্র পাঁচ মাস আগেই প্রতি কেজি লেবু বিক্রি হতো ৮০-৯০ টাকা। সেই লেবুর দাম এখন কেজিতে পাঁচ টাকায় ঠেকেছে। ক্রেতা ও দাম না থাকায় বাগানেই নষ্ট হয়ে পচে যাচ্ছে লেবু।
সোমবার সকালে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন লেবু বাগানে সরেজমিন এ চিত্র দেখা যায়। ফলে হতাশ লেবুচাষিরা। ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁদের।
অনেক কৃষক বাগান থেকে লেবু তুলতেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
লেবুচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় লেবুর উৎপাদন বেশি হওয়া এবং একসঙ্গে প্রায় সব বাগানের লেবু বিক্রির উপযোগী হওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বাজারে ৫০০-৬০০ টাকা হাজার লেবু বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি কেজি লেবুর মূল্য দাঁড়ায় ৫ টাকা। অথচ বাগানের লেবু তুলে বাজারে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত করতে প্রতি শ্রমিককে দিতে হয় ২০০ টাকা করে। এ ছাড়া লেবু বাজারজাত করতে পাটের বস্তা, যানবাহন ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বাবদ চলে যায় আরও ৩০০ টাকা।
প্রতি বস্তা এক হাজার লেবু তুলে প্রস্তুত করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৫০০ টাকা। আর বাজারে গিয়ে এখন দাম পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। সব মিলিয়ে লেবুচাষিদের লাভ- লোকসানের হিসাব মিলছে না।
তবে নাজিরপুর এলাকার কৃষক রমজান আলী জানালেন, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে লেবু ক্রয় করে বিভিন্ন জায়গায় বেশি দামে বিক্রি করছে। এসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারণে লেবু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।
শাহিবাজারের লেবুচাষি আলম আলী বলেন, এ বছর তিনি দুই বিঘা জমিতে লেবু চাষ করেছেন। গত রমজানে প্রতি কেজি লেবু বিক্রি করেছেন ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এখন ৫ টাকা কেজি লেবু, তাও বিক্রি করতে অনেক সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে আসা পাইকাররা এখন আর লেবু কিনতে চাচ্ছে না। কৃষকরা নিজেদের খরচে বাগান থেকে লেবু তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। শ্রমিকসহ অন্যান্য খরচ হিসাব করলে লেবু তুলে বাজারে বিক্রি করাও অনেক ক্ষতি। তাই বাগান থেকে লেবু তুলছেন না বলে জানান তিনি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাব্যাপী এ বছর ৩০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানালেন, বৃষ্টির কারণে স্বল্প সময়ের জন্য বাজারদর একটু কমেছে। আবহাওয়া ঠিক হলেই লেবুচাষিরা আবার সাবেক দর ফিরে পাবে। তবে এই সময়ে লেবুচাষিরা কলম তৈরি করে বাড়তি আয় করতে পারেন। তবে লেবুচাষিরা বাইরের ব্যাপারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেবু বিক্রি করলে ভালো দাম পেতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।