ব্র্যাড পিট পরিচয়ে ফরাসি নারীর ১০ কোটি টাকা লুট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অনলাইনে অভিনব প্রতারণার শিকার হয়েছেন ফ্রান্সের ৫৩ বছর বয়সী এক নারী। এক প্রতারক নিজেকে হলিউড অভিনেতা ব্র্যাড পিট পরিচয় দিয়ে ওই নারীর বিশ্বাস অর্জন করে তাঁর কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

পেশায় ডিজাইনার অ্যান (ছদ্মনাম) ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল টিএফ-ওয়ানকে জানিয়েছেন, ঘটনাটি শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেকে ব্র্যাড পিটের মা হিসেবে পরিচয় দেন। মূলত একটি বিলাসবহুল স্কি ট্রিপের পোস্ট দেখে প্রতারকের নজরে পড়েন অ্যান।

কয়েক দিন পরই অ্যানের কাছে ব্র্যাড পিটের নাম ব্যবহার করা আরেকটি প্রোফাইল থেকে বার্তা আসে। সেই প্রোফাইল থেকে বলা হয়—পিটের মা তাঁর সম্পর্কে অনেক ভালো কথা বলেছেন। এরপর থেকেই শুরু হয় নকল ব্র্যাড পিট ও অ্যানের কথোপকথন।

প্রতারক নানা কাব্যিক বার্তা এবং আন্তরিক মন্তব্যের মাধ্যমে অ্যানের বিশ্বাস অর্জন করেন। অ্যান বলেন, ‘এমন সুন্দরভাবে কথা বলার মতো পুরুষ খুব কমই আছে। আমি সেই মানুষটিকে পছন্দ করতাম, যার সঙ্গে আমি কথা বলতাম।’

শুরুর দিকে অ্যান কিছুটা সন্দিহান হলেও প্রতারক তাঁকে এআই-জেনারেটেড ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে ব্র্যাড পিট হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেন।

এভাবে কথোপকথন বাড়তে বাড়তে অ্যানকে একদিন বিয়ের প্রস্তাব দেন প্রতারক। শুধু তাই নয়, অ্যানের জন্য তিনি একটি বিলাসবহুল উপহার পাঠাচ্ছেন বলেও জানান। তবে উপহার পাওয়ার জন্য অ্যানকে কাস্টমস ফি হিসেবে ৯ হাজার ইউরো পরিশোধ করতে হবে। এভাবে অর্থ পরিশোধের একটি ধারাবাহিক চক্রের মধ্যে পড়ে যান অ্যান।

এর মধ্যেই সেই প্রতারককে অ্যান তাঁর মিলিয়নিয়ার স্বামীর সঙ্গে আসন্ন বিবাহ-বিচ্ছেদের কথাও জানান। কিন্তু প্রতারক ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য তাড়াতাড়ি টাকা প্রয়োজন বলে দাবি করেন।

নিজেকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করতে, প্রতারক এআই-জেনারেটেড ছবিও পাঠান। ওই ছবিতে ব্র্যাড পিটকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে পত্র-পত্রিকায় অ্যান জানতে পারেন, ব্র্যাড পিট তাঁর নতুন বান্ধবী জুটিয়েছেন। সেই বান্ধবী হলেন মার্কিন সুন্দরী ইনেস ডি র‍্যামন। এ অবস্থায় অ্যানের সন্দেহ হয় এবং তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান।

জানা গেছে, নকল ব্র্যাড পিটের কাছে অ্যান এখন পর্যন্ত ৮ লাখ ৩০ হাজার ইউরো পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১০ কোটি টাকারও বেশি। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে বর্তমানে অ্যান গুরুতর মানসিক চাপে ভুগছেন এবং একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন।