বিনোদন ডেস্ক : পরপর দুই মডেল ও অভিনেত্রীর মৃত্যুর পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আরেক অভিনেত্রী, মডেল মঞ্জুষা নিয়োগীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিজের ফ্ল্যাটে মঞ্জুষা নিয়োগীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
শুক্রবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন-চার দিন আগে কলকাতার পাটুলিতে বাবার বাড়িতে আসেন মঞ্জুষা। গতকাল শুক্রবার ওই বাড়ি থেকেই তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সবশেষ একটি টেলিভিশনের ধারাবাহিকে অভিনয় করছিলেন মঞ্জুষা, পাশাপাশি থিয়েটারেও কাজ করছিলেন। একদিন আগেও কাজ করেছিলেন একটি ম্যাগাজিনের ফ্যাশন ফটোশুটে।
তিন অভিনেত্রী ও মডেলের এহেন মৃত্যুর পর বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলো। মাত্র দশদিনের ভেতর তিন রহস্যমৃত্যু! এ কি ঘটে চলেছে একের পর এক? প্রথমে জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী দের রহস্যজনক মৃত্যু। গত ১৭ মে অভিনেত্রীর ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলেও পরে জানা যায় তার মৃত্যু হয়েছে বন্দুকের গুলিতে। যদিও বিষয়টি নিশ্চিত করেনি পুলিশ। জানিয়েছে এ নিয়ে তদন্ত চলছে। এরপর ২৬শে মে উদ্ধার করা হয় আরেক মডেল ও অভিনেত্রী বিদিশা দে মজুমদারের দেহ। মাত্র একুশ বছর বয়েসী এই অভিনেত্রীর দেহও মেলে নিজের ফ্ল্যাটে। মৃত্যুর কারণ একই, ফাঁসি। ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার। পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করে বিদিশা দে মজুমদারের মরদেহও। সবশেষ গতকাল মঞ্জুষা নিয়োগীর মরদেহ উদ্ধার।
মিল আছে তিনটি মৃত্যুর ধরণে। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে তিনটি মৃত্যুই হয়েছে গলায় ফাঁস দিয়ে। তিনজনেরই নিজের ফ্ল্যাট থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এবং তিনজনেরই সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েন ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
অভিনেত্রী পল্লবী দের মৃত্যুতে প্রথম থেকেই সন্দেহের তির ছিল তার প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। পরে পল্লবীর লিভ-ইন পার্টনার সাগ্নিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
বিদিশার মরদেহের পাশে সুইসাইড নোট পেয়েছিল পুলিশ। তাতে উল্লেখ ছিল, “কেরিয়ার নিয়ে সমস্যায় ছিলাম। মনস্থির রাখতে না পেরে এই পথ বেছে নেওয়া। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।” তবে প্রেমিক অনুভব বেরার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং মৃত্যুর আগে বান্ধবীকে বৌ বলে সম্বোধন এইসব আমলে রেখে তদন্ত এগুচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আর মঞ্জুষার মৃত্যুর পর তার মা জানিয়েছেন, মঞ্জুষার ঘনিষ্ট বান্ধবী বিদিশার মৃত্যুতে তীব্র হতাশা আর অবসাদে ভুগছিলেন। এর জেরেই তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। মঞ্জুষার ঘটনায় কোনো ‘সুইসাইড নোট’ পায়নি। তবে অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবেই তদন্ত শুরু করেছে তারা।
আরেকটা বিষয় এই তিন মডেল অভিনেত্রীর পারস্পরিক যোগাযোগ ছিল। মঞ্জুষার ঘনিষ্ট বান্ধবী ছিলেন বিদিশা। আর বিদিশা ও মঞ্জুষা দুইজনই ছিলেন পল্লবীর কাছের বন্ধু। কিন্তু কেন বাড়ছে এই আত্মহত্যার প্রবণতা? শুধুই কি মানসিক অবসাদ, নাকি রয়েছে আরো অন্য কিছুও? এই বিষয়গুলোই ভাবাচ্ছে কলকাতার বিনোদন মহলকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।