বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সাইবার জগতে তথ্য চুরির ঘটনা ব্যক্তিগত ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রতিনিয়ত এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটছে। ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন মাধ্যমে সাইবার হামলা বাড়ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য চুরি হওয়া, অবৈধ লেনদেন, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে যে কেউ চাইলে নির্ধারিত কিছু পদক্ষেপ অনুসরণের মাধ্যমে সাইবার হামলা ও এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারে। মেক ইউজ অব ১০টি বিষয় অনুসরণের কথা জানিয়েছে।
গুগলে ই-মেইল অ্যাড্রেস সার্চ করা: অনলাইনে তথ্য ফাঁস হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ের সহজ উপায় হচ্ছে গুগলে ই-মেইল অ্যাড্রেস সার্চ করা। যদি সার্চ দেয়ার পর ই-মেইল অ্যাড্রেস পাওয়া যায় তাহলে ব্যবহারকারী ব্যক্তিগত তথ্য অপসারণের জন্য আবেদন করতে পারবে।
গুগলের ডার্ক ওয়েব মনিটরিং ব্যবহার: ইন্টারনেটে থাকা সব পেজ বা ওয়েবসাইট গুগলের তালিকাভুক্ত না। তালিকার বাইরে থাকা পেজগুলোই ডার্কওয়েবে পরিচালিত হয় এবং সেখানেই তথ্য আদান-প্রদান হয়ে থাকে। ডার্ক ওয়েবে ব্যক্তিগত তথ্য আছে কিনা সে বিষয়ে জানার জন্য গুগলের ডার্ক ওয়েব রিপোর্ট টুল ব্যবহার করা যায়।
ই-মেইল ও পাসওয়ার্ড ফাঁস হওয়ার বিষয়ে সতর্কতা: গুগলের ডার্ক ওয়েব রিপোর্ট টুল কার্যকর হলেও এটি ফাঁস হওয়া সব তথ্য শনাক্ত করতে সক্ষম নয়। এজন্য ই-মেইল বা পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়েছে কিনা সেটিও যাচাই করতে হবে। হ্যাভ আই বিন পওনড (HaveIBeenPwned) ওয়েবসাইটে এ তথ্য পাওয়া যাবে।
পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার: পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ের পর ভবিষ্যতে কোনো সমস্যায় পড়তে না চাইলে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার শুরু করতে হবে। একাধিক ওয়েবসাইটে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া কোনো পাসওয়ার্ড নিয়ে সন্দেহ হলে সেটি দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে।
লগইন অ্যাক্টিভিটির দিকে খেয়াল রাখা: অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে লগইন অ্যাক্টিভিটির দিকে খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য জিমেইলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লগইন সিকিউরিটি ওয়ার্নিং অ্যালার্টও সেট করা যায়।
জাংক ফোল্ডারে চোখ রাখা: অনেক সময় পাবলিক ওয়াই-ফাইয়ে প্রবেশ করা পর স্প্যাম ফোল্ডারে লগইন নোটিফিকেশন আসে। তবে এর সঙ্গে জাংক ফোল্ডারেও নজর রাখতে হবে। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ই-মেইল সেখানে চলে যায়।
কানেক্টেড ডিভাইস যাচাই করা: লগইন সিকিউরিটি সতর্কবার্তা নতুন করে কোনো অনুপ্রবেশের বিষয়ে জানালেও আগে কোনো সমস্যা হয়ে থাকলে সে বিষয়ে জানাবে না। এ কারণে নেটওয়ার্কে কয়টি ডিভাইস যুক্ত রয়েছে সেটি মাঝেমধ্যেই যাচাই করা উচিত। যদি অপরিচিত কোনো ডিভাইস পাওয়া যায় তাহলে সেটি মুছে দিতে হবে।
কার্ড ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন যাচাই: হ্যাকাররা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ই-মেইলে প্রবেশ করে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে চায়। এর মধ্যে আর্থিক লেনদেন ও ব্যাংকের তথ্যও থাকে। তাই তথ্য ফাঁস হওয়া থেকে নিরাপদ থাকতে প্রায় সময় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও কার্ডের মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদানের তথ্য যাচাই করতে হবে।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যালান্স যাচাই: ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার পর প্রায় সময়ই হ্যাকাররা নতুন ক্রেডিট কার্ড নিয়ে থাকে। যে কারণে ক্রেডিট কার্ডের ব্যালান্স কতটুকু আছে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো তথ্য ভুল মনে হয় এবং লেনদেন অস্বাভাবিক মনে হয় তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তথ্য চুরির বিষয়ে অবগত থাকা: সাইবার জগতে প্রতিনিয়ত হামলা হচ্ছে, ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঘটনা ঘটছে। তাই এ ধরনের ঘটনাগুলোর বিষয়ে সবসময় খোঁজ রাখতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে হতে যাওয়া কোনো হামলা থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা যাবে। সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে হ্যাভ আই বিন পওনড এ সাইন আপ করে নোটিফিকেশন চালু রাখা সহায়ক হবে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়েবসাইট তথ্য চুরির বিষয়ে নিউজলেটারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অবগত করে থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।