জুমবাংলা ডেস্ক : বন্ধু টিপু সুলতানের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা এবং শিক্ষাগত সনদের ফটোকপি ব্যবহার করে ১০ বছর ধরে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছিলেন রাজিব আলম। শুধু নিজের ছবি ব্যবহার করলেও বাকি সব পরিচয় ছিল টিপুর। এইভাবে তিনি রাজধানীর একটি প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রীয় গুদামে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন।
সম্প্রতি রাজিব আলম ও তার কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে ৮৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকার পণ্য আত্মসাতের অভিযোগে থানায় মামলা হয়। মামলার পর রাজিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ টিপু সুলতানের প্রকৃত ঠিকানায় নোটিশ পাঠালে প্রতারণার ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
রাজিব আলমের বাবার নাম আলতাব হোসেন। তাদের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আরিফপুর গ্রামে। রাজিব ২০১১ সালে চন্ডিপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে তেঁতুলিয়া-পীরগাছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড কারিগরি বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
টিপু সুলতান একই গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম খয়বার আলী। তিনি ২০০৯ সালে নওটিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০১১ সালে শরীফাবাদ মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি এবং ২০১৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত এবং গত সাত-আট বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পলমল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় গুদামের এজিএম (স্টোর) মশিউর রহমান (আইডি নম্বর ৮৩৯৫) এবং রাজিব আলম (টিপু সুলতানের নাম ও আইডি নম্বরে) সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হিসাব নিরীক্ষায় ধরা পড়ে যে, মশিউর ও রাজিবসহ কয়েকজনের যোগসাজশে কোম্পানির ৮৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এরপর প্রতিষ্ঠানটির এজিএম ফজলুর রহমান চৌধুরী আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ যখন টিপুর ঠিকানায় নোটিশ পাঠায়, তখন প্রকৃত ঘটনা সামনে আসে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, তিনি আশুলিয়া থানা থেকে সদ্য বদলি হয়েছেন এবং মামলার তদন্তভার নতুন কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করবেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নতুন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে হবে।
এ প্রসঙ্গে টিপু সুলতান বলেন, “রাজিব আমার সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করছে, তা আমার জানা ছিল না। মামলা হওয়ার পর পুলিশ আমার বাড়িতে গেলে বিষয়টি জানতে পারি। বাঘা থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি। পরে আমি চারঘাট সেনা ক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। স্থানীয়ভাবে কিছু লোক বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিয়েছে, তবে আইনি জটিলতা নিয়ে আমি শঙ্কিত।”
রাজিব আলমের বাবা আলতাব হোসেন বলেন, তারা বিষয়টি মীমাংসা করে নেবেন এবং কাউকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।
মামলার বাদী ফজলুর রহমান চৌধুরী জানান, টিপু সুলতানের ভাই তাকে ফোন করে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। তিনি রাজিব আলমের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি আদালতে জমা দিয়েছেন এবং নির্দোষ টিপুকে যেন কোনোভাবে বিপাকে পড়তে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেছেন এবং নতুন কর্মকর্তাকে সব ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেবেন। তার সম্মতি ছাড়া কিছুই হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।