স্পোর্টস ডেস্ক : পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ডাক পড়ল মাশরাফি বিন মুর্তজার। হাতে উঠল চেক। তবে ম্যান অব দা ম্যাচের পুরস্কার নয়, পেলেন ‘ফাউন্ডেশন অব দা ম্যাচ’ স্বীকৃতি। ম্যাচ সেরা তবে কে? মাঠ থেকে ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলে গেলেন, “পুরস্কার তো দিলো শেই হোপকে, তবে সাকিবের পাওয়া উচিত ছিল।”
‘ফাউন্ডেশন অব দা ম্যাচ’ পুরস্কারকে কি বলা যায়? জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া? তা মাশরাফি করেছেন বটে। তার শেষ স্পেলটিই তো ম্যাচের ‘টার্নিং পয়েন্ট।’ ফিফটি করা রোস্টন চেইসকে ফিরিয়ে ১১৫ রানের জুটি ভাঙা, সেঞ্চুরিয়ান শেই হোপকে থামানো, বিপজ্জনক জেসন হোল্ডারকে ফেরানো, সবই করেছেন মাশরাফি তার শেষ ২ ওভারে, ৫ বলের মধ্যে। এরপরও, তার মতে ম্যাচের সেরা সাকিব।
সাকিবের পারফরম্যান্স ছিল আসলে সেরা হওয়ার মতোই। বোলিংয়ে তার লাইন-লেংথ ছিল প্রায় নিখুঁত, গতি বৈচিত্র ছিল বুদ্ধিদীপ্ত। যখন বোলিংয়ে এসেছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলছিল দাপটে। তিনি টেনে ধরেছেন রাশ। যখন জুটি গড়ে তুলছে ক্যারিবিয়ানরা, তখনও সাকিবের বোলিং ভুগিয়েছে তাদের। ১০ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ১ টি উইকেট।
ওজন অনেক ঝরিয়ে, ফিটনেস নিয়ে কাজ করে সাকিব এখন অনেক ঝরঝরে। সেটির ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে ফিল্ডিংয়েও। বরাবরই দলের সেরা ফিল্ডারদের একজন তিনি। এ দিন ছিলেন আরও চনমনে। ইনিংসের শেষ দিকে সীমানায় বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে নিয়েছেন দারুণ এক ক্যাচ।
বাকি ছিল ব্যাটিং। সেখানেও যতটুকু ছিল দলের চাওয়া, পূরণ করেছেন তিনি শতভাগ। যখন উইকেটে গিয়েছিলেন, তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটির পর দল ছিল শক্ত অবস্থানে। সাকিবের ভূমিকা ছিল জয়ের পথে থাকা দলকে ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া। আগে অনেকবার ভালো খেলেও শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি। এ দিন ৬১ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন দলের জয় সঙ্গে নিয়েই। তিন বিভাগেই নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সঙ্গে দলের জয়, এই ম্যাচের সাকিব ছিলেন পূর্ণতায় সমৃদ্ধ।
পূর্ণতার সুবাস আসলে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সেও। সাকিব ম্যাচ সেরা হতে পারতেন। দুর্দান্ত বোলিং আর মাঠে কুশলী নেতৃত্বে সেরা হতে পারতেন মাশরাফি। এমনকি তামিম বা সৌম্যর কেউ ম্যাচ সেরা হলেও বিস্ময়কর হতো না।
সেরার লড়াইয়ের বাইরেও ছিল পারফরম্যান্সের ঝলক। এই কন্ডিশনে কতটা কার্যকর হবে বোলিং, সেই সংশয় দূর করার অভিযানে মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম ধাপে পাচ্ছেন পুরো নম্বর। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করেছেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। রান তাড়ায় মুশফিকুর রহিমের ফিনিশিং ছিল দাপুটে, কর্তৃত্বময়। সব মিলিয়ে দারুণ পেশাদারী পারফরম্যান্স।
তবে কোনো অর্জনে অবদান অনেকেরই থাকে, কিন্তু কারও কারও ছাপ হয় গভীর ও উজ্জ্বল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ে যেমন মাশরাফি ও সাকিব!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।