জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পর্নোগ্রাফি চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা খোয়ালেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ওই চক্রের দুই নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে দুই নারীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম রসুল। এর আগে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের দুই নারীকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী রোজ ভ্যালি গার্ডেন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার সিকিপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন মোল্যার মেয়ে কাকলী বেগম (৩২) এবং পার্শ্ববর্তী জেলা গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার আদর্শ গ্রামের মো. ইউসুফ খানের মেয়ে তানিয়া খানম (৩৩)।
মামলা ও এলাকা সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলার প্রবাসীর স্ত্রীর শ্বশুরবাড়ির পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার আদর্শ গ্রামের মো. ইউসুফ খানের মেয়ে তানিয়া খান সম্পর্কে বেয়াইন হওয়ার সুবাদে আসা যাওয়া করতেন। একপর্যায়ে গত ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তানিয়া খান বেয়াইন প্রবাসীর স্ত্রীর মোবাইল ফোন থেকে ব্যক্তিগত ভিডিও নিজের মোবাইলে নিয়ে সেই ভিডিও ফাইল সুপার এডিটিং করে অশ্লীল ভিডিও তৈরী করেন। এরপর থেকে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক এবং বিকাশের মাধ্যমে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় পর্নোগ্রাফি প্রতারক চক্র।
প্রতারক চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রবাসীর স্ত্রী গত ২২ ডিসেম্বর বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর বোয়ালমারী থানার উপ পরিদর্শক শামীম দেওয়ানের নেতৃত্বে পুলিশের এক টিম অভিযান চালিয়ে বুধবার রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার রোজ ভ্যালী পার্ক থেকে দুই আসামি কাকলী বেগম ও তানিয়া খানমকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরেক আসামি বদিউল আলম তুহিন পালিয়ে যায়।
প্রতারক চক্রের বাকি আসামিরা হলেন- বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের মো. মফিজুর রহমানের ছেলে সেলিম খান ওরফে সুমন শিকদার (৩৩), তার স্ত্রী ফারজানা বেগম (৩২), একই ইউনিয়নের নয়নী পাড়া গ্রামের মুক্তার মোল্লার ছেলে মুজাহিদ (২৫) এবং কুমিল্লা জেলার মুরদনগর উপজেলার ঘোড়াশাল গ্রামের শাহ আলমের ছেলে মো. বদিউল আলম তুহিন (৩৪)। এরা সকলেই পর্নোগ্রাফি চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, তানিয়া খানম সম্পর্কে আমার বেয়াইন হয়। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে আমার শ্বশুর বাড়ি এসে মোবাইল থেকে আমার ব্যক্তিগত ভিডিও নিয়ে সুপার এডিটিং করে। এরপর থেকে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সর্বশেষ প্রতারক চক্র আরো ১০ লাখ টাকা দাবি করলে উপায়ন্তর না পেয়ে গত ২২ ডিসেম্বর বোয়ালমারী থানায় ৬ জনের নামে পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম দেওয়ান বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীর মামলার ভিত্তিত্বে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের দুই নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সকলেই প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম রসূল বলেন, পর্নোগ্রাফি আইনে থানায় মামলা হওয়ার পরপরই দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলামান রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।