স্পোর্টস ডেস্ক : ভীমের সঙ্গে শক্তি শব্দটা যায়। পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে শারীরিক শক্তির ব্যাপারগুলোতে ভীমেরই নামডাক বেশি ছিল। বায়ুর পুত্রের নামে কেঁপে উঠত শত্রু শিবির। মায়াঙ্ক যাদবও কাঁপাচ্ছেন। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে ২১ বছর বয়সী গতিতারকা ত্রাস তুলেছেন আইপিএলে।
মাত্র দুই ম্যাচে যা করেছেন, তা আইপিএল শুরু হওয়ার পর এতগুলো বছরেও করতে পারেননি কেউ।
গতকাল বেঙ্গালুরুর মাঠে ১৮১ রান তুলেছিল লক্ষ্ণৌ। চিন্নাস্বামীর উইকেট বিবেচনায় লক্ষ্যটা কঠিন ছিল না। প্রথম ৪ ওভারেই ৩৬ রান তুলে ফেলেছিলেন বিরাট কোহলি ও ফাফ ডু প্লেসি। কিন্তু পঞ্চম ওভারে ফিরে যান কোহলি।
পরের ওভারে বল হাতে পান যাদব। প্রথম বলেই আউট ডু প্লেসি। তবে সেটা রানআউট। নিজের উইকেট পেতে দেরি করেননি অবশ্য। ওভারের চতুর্থ বলে ঘণ্টায় ১৫১ কিলোমিটার গতির বলে হার মানেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। যাদবের গতির কাছে হার মেনেছেন অস্ট্রেলিয়ান আরেক ব্যাটসম্যান ক্যামেরন গ্রিনও।
ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার গতির বল লেংথ থেকে হালকা সুইং করে গ্রিনের স্টাম্প ভেঙে দেয়। ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট পেয়েছেন যাদব। এর মধ্যে ১৭টি বলে কোনো রান নিতে পারেননি বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানরা। এমন পারফরম্যান্স তাঁকে ম্যাচসেরা বানিয়েছে।
এর আগে অভিষেকে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষেও ম্যাচসেরা হয়েছিলেন যাদব। সেদিন ২৭ রানে ৩ উইকেট পেয়েছিলেন এই ডানহাতি পেসার। আইপিএলের ইতিহাসে এই প্রথম নিজের প্রথম দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরা হলেন কেউ।
তবে এ কীর্তিতে তো আর দর্শক থেকে সাবেক ক্রিকেটার সবাইকে মুগ্ধ করেননি যাদব। তাঁর জাদু তো গতিতে। আইপিএল অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত মাত্র ৪৮টি বৈধ ডেলিভারি করেছেন যাদব। কিন্তু এর মধ্যে যতগুলো ১৫৫ কিলোমিটার গতির বল করেছেন, সেটা গত ১৬ বছরে কোনো ফাস্ট বোলার করতে পারেননি!
শোয়েব আখতার, ব্রেট লি, শন টেইট, ডেইল স্টেইন, আনরিখ নর্কিয়া, মার্ক উড, মিচেল স্টার্কদের মতো গত দুই প্রজন্মের সবচেয়ে গতিময় বোলাররা খেলেছেন আইপিএল। কিন্তু মায়াঙ্ক যাদবের মতো এত নিয়মিত ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়তে পারেননি কেউ। অভিষেকে ১৫৫.৮ কিলোমিটার গতিতে বল করে এ মৌসুমের সবচেয়ে দ্রুততম বলের রেকর্ড করা যাদব গতকাল নিজের রেকর্ড ভেঙে ১৫৬.৭ কিলোমিটার গতির বল ছুড়েছেন।
আইপিএলে তাঁর আগে মাত্র চারজন পেসার ১৫৬ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করেছেন। এবং ২০২২ আইপিএলেই প্রথমবারের মতো কোনো ভারতীয় পেসার ১৫৬ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন। সেই উমরান মালিক এই মৌসুমে হায়দরাবাদের হয়ে এক ম্যাচে নেমে মাত্র এক ওভার বল করেছেন।
মালিকের আবির্ভাবেও শোরগোল পড়েছিল, কিন্তু গতি থাকলেও নিয়ন্ত্রণ ছিল না কাশ্মিরের পেসারের। কিন্তু দিল্লির পেসারের লাইন লেংথ ও নিয়ন্ত্রণ চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে ক্যামেরন গ্রিনকে আউট করা বলটি দেখে তো সাবেক ক্রিকেটাররাও মুগ্ধ ভক্তে পরিণত হয়েছেন। কিংবদন্তি পেসার ইয়ান বিশপ তো দিয়েছেন দারুণ এক তকমা, ‘এই মায়াঙ্ক যাদব ছেলেটা এমনভাবে বল করছে যেন সে পবন-পুত্র। ওফ!’
ভরামঞ্চে কার্ভি ফিগার দেখিয়ে উদ্দাম ড্যান্স দিলো সুন্দরী যুবতী
ভয়ংকর গতিতেও দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারার বিশেষ ক্ষমতা ছিল স্টেইনের। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারও মুগ্ধ যাদবে, ‘এটা সেরকম বল ছিল! গতি।’ ইরফান পাঠান লিখেছেন, ‘মায়াঙ্ক যাদব রোমাঞ্চ জাগানো প্রতিভা। ওর ওভার বর্ণনা করতে যে কী মজা!’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।