জর্জ অরওয়েল একজন বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক। তিনি 1948 সালে স্কটল্যান্ডে বসে প্রচন্ড ঠান্ডায় অনেক কষ্টে একটি উপন্যাস লেখা সম্পন্ন করেন। সময়টি 1948 সাল হলেও তিনি বইয়ের টাইটেলে ১৯৮৪ শব্দের উল্লেখ করেন। তার পরের বছর তিনি মারা যান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের সময় এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় 1984 টাইটেলের বইটির বিক্রি হঠাৎ করে বহুগুণে বেড়ে যায়। কেননা ঐ সময়ে ঘটা নানা ঘটনার সাথে বইটিতে বিভিন্ন বিষয়ে এর অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
সবচাইতে মজার ব্যাপার হল অনেক দেশে এ বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন বেলারুশ ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে নিষিদ্ধ হওয়া দেশেই অনেক বেশি বিক্রি এবং অনুবাদ হয়েছে এসব বই। বিদ্রোহ, সিনেমা, টেলিভিশন, বিতর্ক , যুদ্ধ সবকিছুকে প্রভাবিত করেছে এই উপন্যাস।
কেবল এই বইটি পড়ার কারণে মানুষকে জেলে যেতে হয়েছে। বর্তমান সময়ের সাথে বইটি বেশ প্রাসঙ্গিক। রাজনৈতিক অঙ্গনের সত্যের বিকৃতি কীভাবে ঘটে তার চমৎকারভাবে বোঝা সম্ভব এ বইটি পড়ার মাধ্যমে।
জর্জ অরওয়েল এমন এক ওশেনিয়ার কথা কল্পনা করেছেন যেখানে সবাইকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয় এবং ভিন্নমতের কোন স্থান নেই। শাসকগোষ্ঠী সবাইকে কড়া নজরে রাখে এবং অপরাধের সংজ্ঞা তারাই ঠিক করে দেয়।
শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যায় না এবং কেউ কিছু করলে কঠিন শাস্তি পেতে হয়। ভয় এবং আতঙ্ক মানুষকে ঘিরে রেখেছে এবং কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। জনগণকে মগজ ধোলাই করা হয় এবং তাদের পছন্দের নির্দিষ্ট সিস্টেমের মধ্য দিয়ে চলতে বাধ্য করা হয়।
ওই কল্পিত রাষ্ট্রে সবাইকে অনুগত নাগরিক হিসেবে দেখতে চাই শাসকগোষ্ঠী। শান্তির নামে সবসময় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ রাখা হয়। পৃথিবীর অনেক দেশের বাস্তবতা আজ এরকম। ১৯৪৪ সালে বসে জর্জ অরওয়েল যেটা চিন্তা করেছিলেন সেটা বর্তমানে বহু দেশে শতভাগ প্রাসঙ্গিক।
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনগণকে যেসব ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয় সেটা তুলে ধরেছেন তিনি। এখানে রাষ্ট্র তার নাগরিকের বিশ্বাস এবং আচরণের উপর অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখে। তিনি তার বইয়ে নজরদারির মাধ্যম হিসেবে টেলিস্ক্রিনের সঙ্গে কথা উল্লেখ করেছিলেন। এটিকে আজকের দিনের বিভিন্ন নজরদারি প্রযুক্তির সাথে তুলনা করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।