দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর মাদুরাই কামারাজ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা আড়াই হাজার বছর পুরোনো দুটি পুরুষের খুলির ওপর গবেষণা চালিয়ে তাদের মুখমণ্ডল ডিজিটালভাবে পুনর্গঠন করেছেন। কুন্দগাই এলাকার একটি প্রাচীন কবরস্থান থেকে উদ্ধার করা এসব খুলি কিলাদি নামের ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের কাছাকাছি থেকে পাওয়া যায়।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮০ সালের দিকে কিলাদিতে এক নগরসভ্যতা গড়ে উঠেছিল, যা ভারতীয় উপমহাদেশে ইতিহাসের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এতদিন পর্যন্ত শহরায়ন ও সভ্যতার সূচনা মূলত উত্তর ভারতকেন্দ্রিক বলে ধরা হলেও, এই আবিষ্কার দক্ষিণ ভারতে স্বাধীন এক প্রাচীন সভ্যতার অস্তিত্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গবেষকরা খুলির ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, প্রাচীন কিলাদির বাসিন্দাদের মধ্যে দক্ষিণ ভারতীয় পূর্বপুরুষদের বৈশিষ্ট্য থাকলেও মধ্যপ্রাচ্য, ইউরেশীয় ও অস্ট্রো-এশিয়াটিক বংশের ছাপও রয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়, তারা কেবল স্থানীয় ছিলেন না, বরং বৈশ্বিক অভিবাসন ও মিশ্রণের অংশীদারও ছিলেন।
লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ দল ডিজিটাল স্ক্যানের ভিত্তিতে খুলির পেশী, মাংস ও ত্বক যুক্ত করে মুখমণ্ডল পুনর্গঠন করেন। এ প্রক্রিয়ায় ত্বক, চোখ ও চুলের রঙ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও গবেষকরা জানান, তামিলনাড়ুর বর্তমান জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় রঙ ব্যবহার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুখমণ্ডল পুনর্গঠন ইতিহাসকে আরও ব্যক্তিগতভাবে বোঝার সুযোগ করে দিচ্ছে—যাতে প্রাচীন অবশিষ্টাংশগুলোকে নিছক প্রত্ননিদর্শন নয়, বরং জীবন্ত মানুষের অংশ হিসেবে উপলব্ধি করা যায়।
গবেষকরা বলছেন, কিলাদি সভ্যতা নিয়ে এই গবেষণা কেবল অতীত বোঝার উপায় নয়, বরং আমাদের পরিচয় ও অভিবাসনের ইতিহাস খুঁজে বের করার এক নতুন দিগন্তও খুলে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।