জুমবাংলা ডেস্ক : খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে নতুন রাস্তা পর্যন্ত সড়কটির নাম ‘মুজগুন্নী মহাসড়ক’। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে ভোগান্তির শেষ ছিল না। এ নিয়ে দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ছিল বয়রা ও মুজগুন্নী এলাকার বাসিন্দাদের। ক্ষোভ ছিল খুলনার প্রধান দুই হাসপাতালে যাতায়াতকারী রোগীদেরও। অনেক ক্ষোভ-বিক্ষোভের পর প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কার করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। কিন্তু এর চার মাস না যেতেই বিটুমিন উঠে যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। ফলে আবারও আগের মতো ভোগান্তি পোহানোর শঙ্কায় নগরবাসী।
মুজগুন্নী মহাসড়কের দুই পাশে ৫০০ শয্যার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালসহ প্রায় দেড় ডজন ক্লিনিক, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অর্ধশত অফিস, কেডিএ ও গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বৃহৎ তিনটি আবাসিক এলাকা। স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক দশকের মতো সড়কটি ভাঙাচোরা ছিল। সড়ক সংস্কারের জন্য মানববন্ধন, স্মারকলিপি, কাদাপানিতে দাঁড়িয়ে অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা। একপর্যায়ে ২০২১ সালে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় কেসিসি। প্রায় ৫ দশমিক ৩০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হয় গত মে মাসে।
সড়কটিতে পানি জমে থাকত। এতে খানাখন্দ তৈরি হয়ে দ্রুত নষ্ট হয়ে যেত। এবার ২০ কোটি টাকা যাতে পানিতে না যায়, সেজন্য সড়কের দুই পাশে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা দিয়ে ড্রেন তৈরি করা হয়েছে। এত আয়োজনের পরও চার মাস যেতে না যেতেই সড়কে বিটুমিন উঠে যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। বৃষ্টির পানিতে গর্ত পরিপূর্ণ থাকায় বিপাকে পড়ছেন গাড়িচালকরা।
কেসিসির নথি থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর সড়কটি সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করে কেসিসি। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে পুলিশ লাইন্স পর্যন্ত প্রথম ২ দশমিক ৭৫৮ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ পায় কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ। ওই অংশের ব্যয় ছিল সাড়ে ৯ কোটি টাকা। নতুন রাস্তা পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের (২ দশমিক ৫৪৫ কিলোমিটার) কাজ যৌথভাবে পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ ও শহীদ এন্টারপ্রাইজ। এই অংশে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সড়কের এই অংশের নেভি স্কুলের সামনের সড়কে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সেই গর্ত ভরাট করার পর আবারও গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কে জোড়াতালি দেখে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ।
মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি নিয়ে ১০ বছর ভুগেছি। কাজ শেষ হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু সড়কে আবার গর্ত দেখে এলাকাবাসী হতাশ।’
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘এত টাকা খরচের পরও কেন সড়কটি নষ্ট হলো, তা তদন্ত করা এবং জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন। তা না হলে উন্নয়নের নামে এমন লুটপাট চলতেই থাকবে।’
এ ব্যাপারে কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, সড়কের কয়েকটি স্থানে বেশ কয়েকদিন বৃষ্টির পানি জমে ছিল। এতেই সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি কমলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুনরায় যাতে পানি না জমে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।