বিনোদন ডেস্ক : এটা অন্তত রেকর্ড বটে, একই সিনেমায় গান রয়েছে ২০টির বেশি। যেমন নজির সচরাচর মেলে না। উল্টো দিন যতো যাচ্ছে, সিনেমা থেকে কমছে গানের সংখ্যা। সেই পরিস্থিতিতে ‘মনপুরা’ স্রষ্টা গিয়াস উদ্দিন সেলিম ফের ফিরছেন ২০-এর বেশি গানের একটি সিনেমা নিয়ে। নাম, ‘কাজলরেখা’।
তথ্যগুলো প্রায় পুরনো। নতুন খবর, সেই সিনেমার প্রথম গান প্রকাশ হলো বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে। নাম ‘কইন্যা আঁকে গো আলপনা’। সংগৃহীত কথায় লোকঘরানার সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন ইমন চৌধুরী। কণ্ঠ দিয়েছেন অবন্তী সিঁথি, অন্তরা মণ্ডল ও হুমায়রা ইশিকা। আর গানটির ভিডিওতে দেখা মিলেছে মন্দিরা, মিথিলা, শরিফুল রাজ, গাউসুল আলম শাওন ও খায়রুল বাসারকে। যে গান থেকে মোটামুটি আঁচ করা গেছে, মূল পাত্র-পাত্রীদের চরিত্র ও গেটআপ।
গানটি প্রকাশ প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ক’দিন সিনেমার ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে যেগুলো প্রকাশ করেছি, সেটা ছিলো অনেকটা প্রচারণার প্রস্তুতি। প্রথম গানটির মাধ্যমে আমরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলাম। নির্বাচনের পরপরই আমরা সিনেমা মুক্তির তারিখ ঘোষণা করবো।’
বড় আয়োজনে নির্মিত হয়েছে ‘কাজলরেখা’। এর সেট নির্মাণে কাজ করেছেন হাজং, মগ ও চাকমা নৃগোষ্ঠীর অর্ধশতাধিক মানুষ।
সরকারি অনুদান নিয়ে বাঙাল ফিল্মস-এর ব্যানারে ছবিটি নির্মাণ হয়েছে। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। তার বিপরীতে আছেন সময়ের সফল নায়ক শরিফুল রাজ। অন্যদিকে ভিলেন হিসেবে কঙ্কণ দাসী চরিত্রে পাওয়া যাবে দুই বাংলার প্রিয়মুখ মিথিলাকে।
‘কাজলরেখা’য় আসলে কী এমন আছে যে যেটি নির্মাণের জন্য একযুগ ধরে রীতিমতো যুদ্ধ চালিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম! ২০০৯ সালে ব্লকবাস্টার ‘মনপুরা’র মুক্তির পরই এই ছবিটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন নির্মাতা। প্রযোজক পাননি, নির্মাণের পরিবেশ পাননি, মনের মতো শিল্পী পাননি− কিন্তু হাল ছাড়েননি। বরং প্রতিনিয়ত ছবিটি নির্মাণ প্রক্রিয়া চালিয়ে গেছেন নীরবে। মাঝে জন্ম দিয়েছেন আরও ছবি- ‘স্বপ্নজাল’, ‘পাপ-পুণ্য’, ‘গুণিন’। তবু ‘কাজলরেখা’ বানানোর হাল ছাড়েননি। নিশ্চয়ই এই ছবিতে বড় কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে।
বাংলা ট্রিবিউনের এমন প্রশ্নের জবাবে মুখটা চওড়া করে শুধু বললেন, ‘রহস্য তো আছেই। তবে সেটা তুলে রাখলাম দর্শকের জন্য। পর্দায় দেখে তারাই বুঝুক, কেন আমি ছবিটি নিয়ে এত সংগ্রাম করেছি।’
মৈমনসিংহ গীতিকা থেকে এর গল্প তৈরি। কিন্তু কোনও এক বিশেষ কারণে কোনও প্রযোজকই আগ্রহী হননি বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম হিট ছবি দেওয়া এই পরিচালকের ‘কাজল’-এর জন্য। ‘‘মনপুরা’ আমার প্রথম চলচ্চিত্র। সেটি নিয়েও আমি বহু বছর ঘুরেছি। তবে ‘কাজলরেখা’র মতো এতটা নয়’’, ভাষ্য সেলিমের।
অবশেষে ২০২০ সালে ‘কাজলরেখা’র জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান পান সেলিম। বললেন, ‘ছবিটি শুটিংয়ের জন্য ৫০০ বছর আগের সময়ে ফিরে যেতে হয়েছে আমাকে। লোকেশন, আবহ, সংগীত− সব সেই সময়ের জন্য তৈরি করতে হয়েছে। মৈমনসিংহ গীতিকায় কাজলরেখার যে পালা আছে, সেখান থেকেই ছবির গল্প। ফলে কাজটি বেশ কঠিন ও সময় সাপেক্ষ। সেজন্যই এতটা সময় চলে গেলো।’
জানা যায়, ৫০০ বছর আগে ৯ বছর বয়স হলেই সমাজের নিয়ম অনুযায়ী মেয়েদের বিয়ে দিতে হতো। কাজলরেখার বয়স যখন ৯ বছর হয়, তখন এক নতুন গল্প তৈরি হয়। সেটিই উঠে আসবে সেলিমের এবারের সিনেমায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।