জুমবাংলা ডেস্ক : রূপকথার গল্পের কাঁচা টাকা রাখার কলসি পাওয়া গেল সুনামগঞ্জের গৌরারং জমিদার বাড়ির বংশধর অঞ্জন চৌধুরীর বাসায়। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্ন করে রাখায় সেগুলো এখনও ঝিলিক দেয়। ঝকঝকে কলসিগুলোর ওজন ৪ থেকে ৫ কেজির মতো হবে। খাঁটি পিতল ব্যবহার করায় এগুলো এখনও নতুনের মতো দেখায়। শুধু কলসি নয়, তিনি সংরক্ষণ করে রেখেছেন পালিত হাতির দাঁত, শিকার করে আনা হরিণের সিং।
অঞ্জন চৌধুরী বলেন, জমিদারি আমলে প্রজাদের খাজনার কাঁচা রূপার টাকা রাখার জন্য ব্যবহার করা হতো ছোট বড় আকৃতির পিতলের কলসি। পিতলের কলসিতে রূপার টাকা রাখা নিরাপদ। টাকার রঙ গুণগত মান অক্ষুন্ন থাকতো। এসব কলসি ভরে রূপার টাকা সংরক্ষণ করা হতো দরজা জানালাবিহীন অন্ধকারাচ্ছন্ন চুন-সুড়কির নির্মিত ছোট্ট কুঠরিতে। যা টাকশাল নামে পরিচিত। এখানে জমিদারদের বংশধর ও পরিচালনাকারী ব্যক্তি ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। কুঠরিতে সারিবদ্ধ করে সাজিয়ে রাখা হতো অসংখ্য টাকার কলসি।
এই কলসিগুলো ভারতের রাজস্থান থেকে জমিদাররা অর্ডার দিয়ে তৈরি করে আনতেন। ইংরেজদের খাজনা দিতে, বাড়ির উৎসব অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কাজের জন্য টাকশাল থেকে কলসি বের করে মূল্য পরিশোধ ও অন্যান্য খরচাপাতি করা হতো। এছাড়া বছরে একবার বাড়ির প্রধান ফটকসহ সব প্রবেশদ্বার বন্ধ করে বাঁশের চাটাইয়ে কাঁচা টাকায় রোদ লাগাতেন। যাতে একটি টাকার সঙ্গে আরেকটি টাকা জোড়া লেগে বিকৃত না হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলতো টাকা শুকানোর কাজ। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে এ কাজ করতেন জমিদারের বংশধর ও অনুগত বিশ্বস্তজনরা। সূর্যাস্তের পর কেউ সেখানে যেতে পারতো না।
জমিদার বাড়ির বংশধর অঞ্জন চৌধুরী তার বাসায় সংরক্ষণ করে রেখেছেন কাঁচা টাকা রাখার ছোটবড় এমন দুটি কলসি।
অঞ্জন চৌধুরী কলসি দুটির ব্যাপারে বলেন, ২০০ বছরের পুরানো কলসিগুলো সঠিক যত্নের অভাবে একসময় কালো কুচকুচে রঙ ধারণ করে। পরে সিলেট থেকে চার হাজার টাকা দিয়ে দুটি কলসি পরিষ্কার করে বাসায় সংরক্ষণ করেছি। কলসি দুটোর প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য ও বর্তমান মূল্য লাখ টাকার ওপরে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।