আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১ জানুয়ারি নয়, এই দেশটিতে মহাসমারোহে নতুন বছর পালন করা হয়ে থাকে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে। এখানকার ক্যালেন্ডারে ১২ নয়, ১৩ মাস রয়েছে! ফলে অন্যান্য দেশের তুলনায় ৭ বছর পিছিয়ে আছে দেশটি; পৃথিবীতে ২০২৪ সাল চললেও, তাদের সময় আটকে আছে ২০১৭ সালে।
ব্যতিক্রমী এই দেশটি হলো ইথিওপিয়া। পশ্চিমা হিসাবের চেয়ে সাত বছর আট মাস পিছিয়ে আছে ইথিওপিয়ান ক্যালেন্ডার। তাই ২০০০ সালে নয়, বরং ২০০৭ এর ১১ সেপ্টেম্বর ইথিওপিয়ানরা নতুন সহস্রাব্দকে স্বাগত জানায়।
এর কারণ, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করলেও ইথিওপিয়া চলে তার প্রাচীন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। এই ক্যালেন্ডার ৫২৫ খ্রিস্টাব্দে রোমান চার্চ দ্বারা সংশোধন করা হয়েছিল। অনন্য এই ক্যালেন্ডার ইথিওপিয়ার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে প্রোথিত। ১৩ মাসের এই প্রথা প্রাচীন কপটিক ক্যালেন্ডার থেকে উদ্ভূত হয়েছে বলে মনে করা হয়, যা দেশটির ধর্মীয় রীতি পালনের তাৎপর্য বহন করে।
দেশটিতে বছরের প্রথম ১২ মাস গণনা করা হয় ৩০ দিনে। তবে ১৩তম বা শেষ মাসটি ৫ বা ৬ দিনের (অধিবর্ষ হলে) হয়ে থাকে; এই শেষ মাসকে বলা হয় পাগিউম। ইথিওপিয়ার ধর্মীয় উৎসব, কৃষি মৌসুম, ফসল কাটা উদযাপন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত অতিরিক্ত এই মাসটি।
প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যের জন্য পর্যটকদের কাছে ইথিওপিয়ার কদর রয়েছে। তবে পর্যটকদের জন্য ক্যালেন্ডারের এই অসঙ্গতি কোনো অসুবিধা তৈরি করে না; তাছাড়া ইথিওপিয়ান সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপ গঠনে এর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বেশিরভাগ ইথিওপিয়ান গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে পরিচিত এবং সংস্কৃতিগতভাবে সমৃদ্ধ এই জাতি একই সময়ে দুই ক্যালেন্ডারের মধ্যে সমন্বয় করতে সক্ষম।
১৯৭৪ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলে প্রায় ৩৮ লাখ বছর আগের একটি মাথার খুলি খুঁজে পান। ধারণা করা হয়, এটি একেবারে প্রথম দিককার মানুষের মতো দেখতে এপ প্রজাতির পূর্বজ (হোমিনিড)।
ইথিওপিয়া সেই দেশ, যা কখনোই ইউরোপীয়দের দ্বারা সম্পূর্ণ উপনিবেশ ছিল না। দেশটি তার অনন্য খাবারের জন্যও পরিচিত। সেখানকার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটি পালন করে। এই বিশ্বাসের অনুসারীরা বছরে ২০০-২৫০ দিন উপবাস করে। ইথিওপিয়ান উপবাস প্রচলিত উপবাসের ধারণা থেকে ভিন্ন; এ সময় ডিম, মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকে বিরত থাকতে হয়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, নিউজ এইটিন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।