স্পোর্টস ডেস্ক: আঁতোয়ান গ্রিজম্যানের জোড়া গোলে শেষ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ পরে জয়ের দেখা পেয়েছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার ইউরোপীয়ান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে গ্রুপ-ডি’র নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে ঘরের মাঠে সফরকারী ফিনল্যান্ডকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
করিম বেনজেমার সাথে দারুন সমন্বয় করে উভয় অর্ধে গোল দুটি করেছেন গ্রিজম্যান। এই জয়ে ছয় ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সাত পয়েন্টে সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থেকে গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে ফ্রান্স। প্রথমার্ধে ভাল খেলা ফিনল্যান্ড পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকলেও তাদের হাতে রয়েছে বাড়তি দুটি ম্যাচ।
এদিকে তলানির দল কাজাকাস্থানের সাথে ২-২ গোলে ড্র করে চার ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বসনিয়া। পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে ইউক্রেন।
কাল ম্যাচ শেষে ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশ্যম বলেছেন, ‘এই ম্যাচটি যদিও পুরোপুরি সন্তোসজনক ছিলনা। কিন্তু কৌশলগত দিক থেকে আমরা ভালই করেছি। এর মাধ্যমে আমাদের আত্মবিশ্বাস আরো বেড়েছে। এই ম্যাচের ফলাফলটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখন আমাদের নভেম্বরে পুরো কাজ শেষ করতে হবে।’
বসনিয়া ও ইউক্রেনের সাথে দুটি ১-১ গোলের ড্রয়ের ম্যাচের পর মানসিক ভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে উঠেছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সেই হতাশা থেকে অন্তত দল বেরিয়ে আসতে পেরেছে এতেই সন্তুষ্ট দেশ্যম। জয়ের ধারায় ফিরতে গতকাল স্বাভাবিক ৫-২-৩ ফর্মেশনেই খেলতে নামে ফ্রান্স। ফুলব্যাক হিসেবে কাল দলে ছিলেন লিও ডুবোয়িস ও থিও হার্নান্দেজ, আর আক্রমনভাগে ছিলেন গ্রীজম্যান, এন্থনি মার্শাল বেনজেমা।
ম্যাচের প্রথম সুযোগটি অবশ্য সৃষ্টি করেছিল ফিনল্যান্ড। উরহো নিসিলা ফ্লোটিং শটটি হুগো লোরিসের মাথার উপর দিয়ে অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। এরপর আক্রমনের ধার বাড়াতে থাকে লেস ব্লুজরা। ২২ মিনিটে বেনজেমার একটি শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন ফিনিশ গোলরক্ষক লুকাস হ্রাডেকি। ২৫ মিনিটে বেনজেমার এসিস্টে গ্রিজম্যান ফ্রান্সকে এগিয়ে দিতে কোন ভুল করেননি।
বিরতি পরও ফিনল্যান্ডের আগ্রাসী ভূমিকা বজায় ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গ্রিজম্যানের দ্বিতীয় গোলে ফিনল্যান্ডের সব আশা শেষ হয়ে যায়। বেনজেমার কিছু ভাল প্রচেষ্টা রুখে দেন হ্রাডেকি। ৫৩ মিনিটে ডুবোয়িসের সহায়তায় গ্রিজম্যান ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এনিয়ে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ৪১টি আন্তর্জাতিক গোল করলেন গ্রিজম্যান। মিশেল প্লাতিনির সাথে যৌথভাবে ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এখন তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। কিছুক্ষন পরে হার্নান্দেজের ক্রস থেকে মার্শাল গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ১২ বছর আগে অলিম্পিক লিঁওর এই মাঠ থেকেই রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন বেনজেমা। পরিচিত পরিবেশে সাবেক স্টেডিয়ামে ফিরে এসে তাই বেনজেমা পুরো ম্যাচেই নিজেকে দারুনভাবে প্রমান করেছেন।
এদিকে প্রতিবেশী স্লোভেনিয়াকে ঘরের মাঠে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে বাছাইপর্বে গ্রুপ-এইচ’র শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে ক্রোয়েশিয়া। এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মারিও পাসালিচ এক গোল করার পাশাপাশি অপর একটি গোলে এসিস্টও করেছেন।
এই জয়ে ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রাশিয়াকে গোল ব্যবধানে পিছনে ফেলে গ্রুপের শীর্ষস্থানটি দখল করেছে বিশ্বকাপের রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়া। রাশিয়া কাল ঘরের মাঠে মাল্টার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ী হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা স্লোভাকিয়া সাইপ্রাসকে ২-০ গোলে পরাজিত করে নয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
৩৩ মিনিটে স্ট্রাইকার মারোক লিভায়ার গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েটরা। জোসিপ জুরানোভিচের ক্রস থেকে পাসালিচের শট বারে লেগে ফেরত আসলে ফিরতি শটে পোস্টের খুব কাছে বল জালে জড়ান লিভায়া। স্লোভানিয়ান গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক দুইবার আন্দ্রে ক্রামারিচকে হতাশ করেছেন। কিন্তু ৬৬ মিনিটে পাসালিচকে আর রুখতে পারেননি। ইভান পেরিসিচের লো ক্রস থেকে নিখুঁত ফুটওয়ার্কে পাসালিচ ব্যবধান দ্বিগুন করেন। স্টপেজ টাইমে মিসলাভ ওরসিচের ক্রস থেকে ডাইভিং হেডে নিকোলা ভøাসিচ ক্রোয়েশিয়াকে তৃতীয় গোল উপহার দেন। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।