জুমবাংলা ডেস্ক : ‘মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ৫০০ টাকা বলেছি দেয়নি। সেখানে না কিনে এখানে (খামারবাড়ি মোড়ে) চলে এসেছি। ৯ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ কিনলাম ২০০ টাকায়। এটা বাজারের তুলনায় খুবই স্বস্তা।’ বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব হোসনে আরা বেগম। তার স্বামী রুস্তম আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। থাকেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ভবনে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি বঙ্গবন্ধু চত্বরে বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশপনের (বাফা) উদ্যোগে‘কৃষকের পণ্য, কৃষকের দামে’ এই স্লোগানে ন্যায্যমূল্যে তরমুজ বিক্রি করা হয়। সেখানেই কথা হয় হোসনে আরা বেগমের সাথে।
লাইনে দাঁড়িয়ে তরমুজ কিনে ফিরছিলেন আরেক নারী ফারজানা। তারও বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রথম রোজায় তরমুজ কিনতে বাজার গেলাম। ৮০ টাকা কেজি। নিলে নেন, না নিলে না নেন। দোকানদারের এমন কথায় বাসায় ফিরতে হয়েছে। ছেলে মেয়েরা তরমুজ খুব পছন্দ করে। সেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, দাম কমুক, তারপর কিনে খাব। তারপর আর কেনা হয়নি। আজ নিলাম। ৯ কেজি প্লাস, ২০০ টাকায়।
সেখানে কথা হয় আরো কয়েকজনের সাথে। স্বল্পমূল্যে তরমুজ কিনে তারা মহাখুশি। তবে, এই কার্যক্রম রোজার শুরু থেকেই নিলে ভাল হতো বলে মন্তব্য অনেকের।
খামারবাড়িসহ রাজধানীর ৫টি স্পটে ন্যায্যমূল্যে তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে আজ থেকে। চলবে ২৭ রোজা পর্যন্ত।
অন্য ৪টি স্পট হলো উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের জমজম টাওয়ার, সচিবালয়ের সামনে আব্দুল গণি রোড, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন এবং পুরান ঢাকার নয়াবাজারে স্বল্পমূল্যে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছে বাফা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথমদিন ৫টি গাড়িতে মোট ২ হাজার ৫০০ পিস তরমুজ বিক্রি করা হয়। এতে নিম্মবিত্তের পাশাপাশি মধ্য ও মধ্যনিম্মবিত্ত পরিবারের মানুষ ব্যাপক ভিড় করেন। দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে তারা ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে তরমুজ কিনেন। দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে এসব তরমুজ বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
প্রচণ্ড রোদ। বেলা ১১টার আগে থেকেই খামারবাড়ি মোড়ে (বঙ্গবন্ধু চত্বর) ন্যায্যমূল্যে তরমুজ কিনতে মানুষের দীর্ঘ লাইন। ১২টার দিকে তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশপনের (বাফা) সভাপতি এ কে এম নাজিব উল্লাহ। এ সময় বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী আজম শিবলী, কৃষি মন্ত্রীর মেয়ে ও আওয়ামী লীগ নেত্রী উম্মে ফারজানা ডায়না উপস্থিত ছিলেন।
বাফা সভাপতি এ কে এম নাজিব উল্লাহ বলেন, তরমুজের যে উচ্চমূল্য, এর সুবিধা কৃষক পাচ্ছে না। মধ্যস্বত্বভোগীরা তা খেয়ে ফেলছে। এজন্য আমরা ‘কৃষকের পণ্য, কৃষকের দামে’ বিক্রি করে দেখাতে চাচ্ছি যে, তরমুজের দামটা এত বেশি না।
তিনি আরো জানান, আগামী বছর থেকে রোজার শুরু থেকেই স্বল্পমূল্যে তরমুজ বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে
পরে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুস শহীদ তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি বাফার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কৃষকের দামে পাঁচ কেজির বেশি ওজনের একটি তরমুজ ১০০ টাকা, ৭ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ১৫০ টাকা, ৯ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২০০ টাকা, ১১ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২৫০ টাকায় পিস হিসাবে বিক্রি করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।