আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কাজাখস্তানের তুর্কিস্তান অঞ্চলে প্রায় ২ হাজার বছরের পুরানো সমাধি থেকে সোনার গহনা, তীরের মাথা এবং একটি ব্রোঞ্জের বড় আয়না আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ইউরেশিয়াজুড়ে এ জাতীয় আয়নাগুলো অত্যন্ত মূল্যবান ছিল।
নিদর্শনগুলো কাংজু রাজ্যের সময়ে তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর মধ্যে তুর্কিস্তান অঞ্চলে কাংজু রাজ্যের শাসন ছিল।
তুর্কিস্তানের আঞ্চলিক সরকারের কর্মকর্তাদের একটি বিবৃতি অনুসারে, গহনাগুলো প্রাচীন রোম, প্রাচীন চীন এবং আরও দক্ষিণে কুষাণ সাম্রাজ্যের সঙ্গে কংজু রাজ্যের বাণিজ্যে অত্যন্ত উন্নত কারুশিল্পের প্রমাণ দেয়।
বিভিন্ন নকশায় আবৃত বৃত্তাকার ব্রোঞ্জের আয়নাটি হান রাজবংশের সময় চীনে উদ্ভূত হয়েছিল বলে মনে হয়। এই রাজবংশ ২০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করেছিল।
এমন নকশা করা আয়না যেসব নারীদের সমাধির সঙ্গে থাকতো, মনে করা হতো তিনি তৎকালীন সময়ে ধনী এবং প্রভাবশালী ছিলেন। এর আগে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ উরাল অঞ্চলেও অনুরূপ আয়না পাওয়া গেছে।
কাজাখস্তানের ওজবেকালি ঝানিবেকভ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এবং স্থানীয় সরকারি প্রত্নতাত্ত্বিকরা তুর্কিস্তানের ওরদাবাসিনস্কি জেলার তিনটি সমাধিতে সন্ধান চালান। সমাধিগুলোর দুটিতে প্রাচীনকালে লুট করা হলেও, একটিতে মূল্যবান ধ্বংসাবশেষ রয়ে গেছে।
ব্রোঞ্জের আয়না ছাড়াও নিদর্শনগুলোতে একটি রোমান-স্টাইলের ‘ব্রোচ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। ছোট-বড় জপমালা, একটি জগ, একটি জুতা, একটি বেল্ট বাকল, পাখি শিকারের জন্য ডিজাইন করা একটি তীরচিহ্ন এবং দুটি সোনার কানের দুল ছিল সমাধিতে। এগুলো খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর বলে মনে করা হয়।
সমাধিতে পাওয়া কানের দুলগুলো ‘পলিক্রোম্যাটিক’ সোনার একটি রঙিন খাদ দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। ফিরোজা ও রুবি দিয়ে আবৃত, অর্ধচন্দ্র আকারে তৈরি। নিচের অংশেও নানারকম সজ্জাসহ, সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে এমনভাবে এটি ডিজাইন করা হয়েছিল।
ওজবেকালি ঝানিবেকভ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক আলেকজান্ডার পোদুশকিন বলেন, কাংজু রাজ্য ছিল মূলত বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষের একটি ফেডারেশন। যার মধ্যে ছিল- সারমাতিয়ান, জিওংনু এবং সাকি (যারা সিথিয়ান হতে পারে) যাযাবর গোষ্ঠী। চীন ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী গ্রেট সিল্ক রুটের কিছু অংশে কাংজু শহরগুলোর অবস্থান ছিল। যার ফলে প্রাচীন বিশ্বজুড়ে তাদের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ ছিল।
ভরপুর রোমান্সে পরিপূর্ণ এই ওয়েব সিরিজ, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না
প্রত্নতাত্ত্বিক আলেকজান্ডার পোদুশকিন আরও বলেন, সমাধিতে পাওয়া নিদর্শনগুলো এখন আস্তানা শহরে কাজাখস্তান প্রজাতন্ত্রের জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত হবে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।