সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে গত জানুয়ারী থেকে জুন মাস পর্যন্ত ছয় মাসে হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা, চোলাইমদ ও ফেনসিডিলসহ প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মাদক উদ্ধার ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ৩৮৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিপুল পরিমাণ এ মাদক উদ্ধার ও ব্যবসার সাথে জড়িতদের আটকের ঘটনায় মামলা হয়েছে আড়াই শতাধিক। অধিকাংশ মাদক ব্যবসায়ীরা জামিনে বেরিয়ে ফের মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে। এতে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ হচ্ছেনা বলে দাবি সচেতন মহলের।
জেলায় মাদক উদ্ধারে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তবে মাদক উদ্ধারে থানা পুলিশের তেমন সফলতা নেই বললেই চলে। উল্লেখিত সময়ে উদ্ধারকৃত এসব মাদকের অধিকাংশই উদ্ধার করা হয়েছে জেলার সিংগাইর, সদর ও সাটুরিয়া উপজেলা থেকে। তবে অন্যান্য উপজেলাতেও রয়েছে মাদকের ব্যাপক ছড়াছড়ি।
জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে নিত্য-নতুন কায়দায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। তবে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিত্যনতুন কৌশলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে একের পর এক সফলতা পেয়েছে।
মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের মাদকবিরোদী অভিযানেে উদ্ধার হওয়া মাদকের মধ্যে রয়েছে ২ কেজি ৩১৭ গ্রাম হেরোইন, ১৩৮৯৫ পিস ইয়াবা, ১১ কেজি ৪০০ গ্রাম গাঁজা, ১৩১ লিটার চোলাই মদ, ৮৩ বোতল ফেনসিডিল। অপরদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে উদ্ধার হওয়া মাদকের মধ্যে রয়েছে ২৩৩.৫ গ্রাম হেরোইন, ১০৩৫ পিস ইয়াবা, ২০ কেজি গাঁজা, ২৪০ লিটার চোলাই মদ, নেশার ইনজেকশন ৮৬ এ্যাম্পুল, বিলাতী মদ ৬ বোতল।
এদিকে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যুদ্ধাপরাধী, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, হত্যাকারী, ধর্ষক ও ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী গ্রেপ্তারে সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছে র্যাব-৪ (সিপিসি-৩)। গত ছয় মাসে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যুদ্ধাপরাধী, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, হত্যাকারী, ধর্ষকসহ মোট ১১২ জনকে আটক করেছে তারা।
মানিকগঞ্জ জেলা হিউম্যান রাইটস ফোরামের সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ছোট ছোট মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে মাদকের গডফাদারদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। উপযুক্ত স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে যাতে আইনের প্রয়োগ হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে সংঘটিত বেশির ভাগ অপরাধের পেছনে রয়েছে মাদক। এসপি স্যারের নির্দেশনায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে মাদক উদ্ধারসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় আনতে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। তবে কিছু মাদক ব্যবসায়ী জামিনে বেরিয়ে ফের মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে। তাই মাদক ব্যবসায়ীদের জামিনের বিষয়ে আরো কঠোরতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: হামিমুর রশীদ বলেন, আমরা নিয়মিত মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যুসমাজকে সাথে নিয়ে মাদকের কুফল ও মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মানুষেরা এগিয়ে আসলে মাদকের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।