তাকী জোবায়ের: বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন ডেপুটি গভর্নরকে ফোন করে পদত্যাগ করতে বলেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান। তারা হলেন কাজী ছাইদুর রহমান, মো. খুরশিদ আলম ও ডেপুটি গভর্নর পদমর্যাদায় বিএফআইইউ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মাসুদ বিশ্বাস।
রবিবার সন্ধ্যার পর ফোন করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বলেন। তবে এই পদত্যাগের বিষয়ে জানেন না অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
রবিবার রাতে কাজী ছাইদুর রহমান জানিয়েছেন, এফআইডি (আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ) থেকে ফোন করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
এই পদত্যাগের নির্দেশের বিষয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত আমি দেইনি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই।
এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর খুঁজতে তিন সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পরই দুই ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউ প্রধানকে পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, সার্চ কমিটিতে আছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, সাবেক অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর নজরুল হুদা।
এ প্রসঙ্গে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সার্চ কমিটির কথা আমি শুনেছি। অফিসিয়াল নোটিশ পাওয়ার পর আমরা বসবো। নতুন ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ হতে কতদিন লাগবে, সে বিষয়ে এখন কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘আগে বসি, এরপর সিভি নেওয়া শুরু হবে।’
এর আগে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকে চরম অস্থিরতা শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, চার ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা দফতরের প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করেন।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবনে অবস্থিত গভর্নরের ফ্লোরে ঢুকে পড়েন এবং ডেপুটি গভর্নর-১ কাজী ছাইদুর রহমানকে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করেন। এ সময় তিনি একটি সাদা কাগজে পদত্যাগের কথা লেখেন এবং তাতে সই করেন।
এরপর তিনি ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান। এসময় নীতি উপদেষ্টা আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাসের পদত্যাগ করেন। এছাড়া বের করে দেওয়া হয়েছে ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান ও বিএফআইইউ’র প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে। তবে ওইদিন ব্যাংকে আসেননি আরেক ডেপুটি গভর্নর খোরশেদ আলম। তবে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ডেপুটি গভর্নর-২ নূরুন নাহারকে দায়িত্বে রাখেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা। নতুন গভর্নর দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনিও পদত্যাগ করবেন বলে আশ্বাস নেয় তারা।
এদিকে রবিবার (১১ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফসানা বিলকিসের সই করা এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে—নতুন গভর্নর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার। আদেশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের পদত্যাগজনিত কারণে ১১ আগস্ট থেকে নতুন গভর্নরের যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত দৈনন্দিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।
এতে আরও বলা হয়, ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার গভর্নরের দৈনিক ডাক দেখবেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।