আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বে পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু হয়েছে প্রায় ১০২ বছর। দেশের প্রায় সব নাগরিকের পাসপোর্ট থাকা খুবই জরুরি। পাসপোর্ট ছাড়া দেশের বাইরে ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট থাকতেই হবে। রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত, সরকারি কর্মকর্তারা সবাই যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করেন, তখন তাদের সবাকেই কিন্তু অবশ্যই কূটনৈতিক পাসপোর্ট বহন করতে হয়।
পৃথিবীর ২০০টিরও বেশি দেশে ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে, শুধু তিনজন ব্যক্তিরই শুধু কোথাও ভ্রমণে কোনো পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই। এই তিন ব্যক্তি বিদেশ ভ্রমণে গেলে তাদের কাছে পাসপোর্টের কথা কেউ জিজ্ঞেসও করে না। তাদের অতিরিক্ত আতিথেয়তা এবং পূর্ণ সম্মানও দেওয়া হয়।
শুধু তিনজন বিশেষ ব্যক্তির জন্য ছাড়। বিশ্বের কোথাও ভ্রমণ করার জন্য কখনোই কোনো পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই এমন ৩ জন বিশেষ ব্যক্তি কারা চলুন জেনে নেওয়া যাক কারা। ব্রিটেনের রাজা, জাপানের রাজা এবং রানির এই সুবিধা রয়েছে। চার্লস ব্রিটেনের রাজা হওয়ার আগে রানি এলিজাবেথের হাতে এই সুবিধা ছিল।
চার্লস ব্রিটেনের রাজা হওয়ার পর তার সেক্রেটারি তার দেশের পররাষ্ট্র দফতরের মাধ্যমে সবদেশে একটি নথি বার্তা পাঠান। চার্লস যেহেতু এখন ব্রিটেনের রাজা, তাই তাকে সম্মানের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের অনুমতি দেওয়া হোক। এতে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে। এর পাশাপাশি প্রোটোকলের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
তবে ব্রিটেনের রাজা এই সুবিধা বা অধিকার পেলেও তার স্ত্রী কিন্তু তা পান না। অন্য দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার কাছে ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। একইভাবে রাজপরিবারের প্রধান ব্যক্তিদের কাছেও ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট থাকতে হবে। তাদের যে কোনো দেশের বিমানবন্দরে যাওয়া-আসার পথ আলাদা।
এলিজাবেথ যখন রানি ছিলেন তখন তিনি এই পাসপোর্ট পাওয়ার বিশেষ সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপের ছিল কূটনৈতিক পাসপোর্ট। ব্রিটেনে প্রথম সম্মান দেওয়া হয় রাজকীয় সিংহাসনে বসা ব্যক্তিকে। এখন মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কেন এই ৩জন বিশেষ এই সুবিধা পান।
জাপানিদের ভিসা ফ্রি প্রবেশাধিকার আছে ১৯৩টি দেশে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট জাপানের রয়েছে। জাপানের বর্তমান সম্রাট নারুহিতো। তার স্ত্রী মাসাকো ওওয়াটা ছিলেন জাপানের সম্রাজ্ঞী। পিতা আকিহিতো সম্রাট পদত্যাগ করার পর তিনি এই পদ গ্রহণ করেন। যতদিন তার বাবা জাপানের সম্রাট ছিলেন, ততদিন তার এবং তার স্ত্রীর পাসপোর্ট রাখার প্রয়োজন ছিল না।
৮৮ বছর বয়সি আকিহিতো ২০১৯ সাল পর্যন্ত জাপানের সম্রাট ছিলেন, এরপর তিনি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাই এখন বিদেশ ভ্রমণের সময় তাদের কনস্যুলার পাসপোর্ট বহন করতে হবে।
জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী-উভয়ই এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। বর্তমানে জাপানের সম্রাট নারুহিতো এবং তার স্ত্রী মাসাকো ওওয়াদা জাপানের সম্রাজ্ঞী। সম্রাট নারুহিতোর বাবা আকিহিতো সম্রাট পদ থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি এই পদ গ্রহণ করেন।
যতদিন আকিহিতো জাপানের সম্রাট পদে ছিলেন, ততদিন তার এবং তার স্ত্রীর পাসপোর্টের কোনো প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এখন বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্ট রাখতে হয়। জাপানের কূটনৈতিক নথি ঘেঁটে জানা যায় যে, ১৯৭১ সাল থেকে দেশের সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা শুরু করে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক।
বিশ্বের সব প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণের সময় পাসপোর্ট বহন করতে হয়। কিন্তু নিয়ম অনুসারে তাদের পাসপোর্ট হবে কনস্যুলার পাসপোর্ট। গন্তব্য দেশ এই নেতাদের ভ্রমণে সম্পূর্ণ সুবিধা প্রদান করে। এই নেতাদের ক্ষেত্রে সিকিউরিটি চেক এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সূত্র: সিএনবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।