শাহজাদা তোহামিন : পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে বইছে সুবাতাস। তবে এখনও ফেরিমুক্ত হতে পারেনি পটুয়াখালীর দশমিনা, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলা। এ জন্য পদ্মা সেতু হলেও তার সুফল পাচ্ছেন না এ তিন উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সড়ক পথে ওই তিন উপজেলা থেকে জেলার বাউফল ও দুমকি উপজেলার মধ্যবর্তী লোহালিয়া নদীর ওপর বগা-চরগরবদী পয়েন্টে সেতু না থাকায় এখনও যানবাহন পার হচ্ছে ফেরিতে। ফলে জেলার ওই তিন উপজেলার মানুষ এখনও পুরোপুরি পদ্মা সেতুর সুবিধা গ্রহণ করতে পারেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ওই তিন উপজেলার প্রবেশদ্বার বগা-চরগরবদী ঘাটে ফেরির স্বল্পতা থাকায় নদী পার হতে প্রায়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
অনেক সময় ফেরিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বা অতি জোয়ারের কারণে ফেরি ঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে ও অ্যাপ্রোচ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেলে যানবাহনগুলোর পারাপারে ৩-৪ ঘণ্টাও লেগে যায়।
এমন ভোগান্তিতে দূরপাল্লার যাত্রীরা বাধ্য হয়ে গাড়িতে অপেক্ষা করলেও জেলা ও বিভাগীয় শহরের সঙ্গে যাত্রীরা বাধ্য হয়েই গাড়ি থেকে নেমে সঙ্গে থাকা মালামাল হাতে বা মাথায় নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খেয়া পার হয়ে বাড়তি ব্যয়ে বিকল্পভাবে গন্তব্যে যাত্রা করে। এতে বিশেষ করে শিশু মহিলা বৃদ্ধ ও রোগীদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। এ ছাড়া রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সরকারি ও বেসরকারি যানবাহনগুলো পরে নানা বিপাকে।
সড়ক পথে ঢাকা থেকে দশমিনাগামী যাত্রী মো. সোহেল বলেন, রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে পদ্মা সেতু পার হয়ে বগা ফেরি ঘাট পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার পথ আসতে সময় লেগেছে পৌনে চার ঘণ্টা। অথচ ওই ফেরি ঘাটে দেরি হওয়ার কারণে বগা থেকে দশমিনা পর্যন্ত মাত্র ২৮ কিলোমিটার পথ আসতে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টা।
গলাচিপা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রপন বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। দশমিনা, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলায় পদ্মা সেতুর পরিপূর্ণ সুফল পেতে বগা সেতু নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই।
দশমিনা সরকারি আবদুর রশিদ তালুকদার কলেজের প্রভাষক আকন্দ এমবিএ বিপ্লব বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় এ অঞ্চলের উন্নয়নের দ্বার উম্মোচন হয়েছে। এখন বগা সেতু নির্মাণ হলে এই তিন উপজেলা উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হবে এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এই তিন উপজেলার শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাশ করতে পারবে। বগা সেতু নির্মাণ এখন এই তিন উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান বলেন, বগা সেতু নির্মাণ সংক্রান্তে ২০২০ সালের দিকে একটি টিম ভিজিট করতে আসার কথা ছিল। করোনার কারণে আসতে পারে নাই। এই সেতু নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কিত তথ্য সড়ক ভবন দিতে পারবে। সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।