জুমবাংলা ডেস্ক : ৪০ বিঘা জমিতে এই পেঁয়াজের বীজের আবাদ করেছেন লাভলী আক্তার ও ইনতাজ মোল্লা দম্পতি। যা থেকে কোটি টাকার লাভের আশা করছেন তারা। কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজে দিনবদলের এমন গল্প এখন দোলা তুলছে ফরিদপুরের ফসলি মাঠে। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবছর ফরিদপুর জেলায় পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজের আমদানি ঠেকানো না গেলে কৃষককে মার খেতে হবে বলেও আশঙ্কা করছেন পেঁয়াজ বীজ চাষিরা।
লাভলী আক্তার ও ইনতাজ মোল্লার বাড়ি ফরিদপুরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে পেঁয়াজ বীজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন তারা। নুন আনতে পান্তা ফুরাতো এক সময় তাদের। কিন্তু এখন এই পরিবার কোটিপতি। নিজস্ব জমিতে তাদের পাকা ইমারতে বহুতল ভবনে যেমন জৌলুস বেড়েছে, তেমনি জীবনযাপনে এসেছে ঊর্ধ্বমুখি পরিবর্তন।
প্রতিবছর তারা উপার্জনের টাকায় নিজেদের স্থাবর সম্পত্তিও বাড়াতে পারছে। নতুন করে কিনছে জায়গাজমি। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছেলে আর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ে নিয়ে এখন তাদের ব্যয়বহুল সংসার। যা এই কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বদৌলতে তাদের কাছে ধরা দিয়েছে।
এই অনুপ্রেরণার গল্প জানা যায় লাভলি আক্তারের মুখেই। তিনি বলেন, বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে দেখি শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পেঁয়াজ বীজের চাষ করছেন। তিনিও স্বামীকে সহায়তায় নামেন। এতে প্রথম বছরেই ভালো আয় হয় তাদের। এরপর আর থেমে থাকেননি। পেঁয়াজ বীজের টাকা দিয়ে ৭৫ লাখ টাকা খরচ করে বাড়িতে বিল্ডিং দিয়েছি। প্রতিবছরই নতুন জমি কিনছি। এক সময় যা ছিলো অকল্পনীয়, এখন তাই বাস্তব আমাদের কাছে।
লাভলী জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বিঘা প্রতি দুই থেকে আড়াই মণ পেঁয়াজ বীজ পাবেন বলে আশা করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে এই বীজের আবাদ করতে এক লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়। সেই হিসাবে সবমিলিয়ে তাদের এবার প্রায় কোটি টাকার মতো লাভ থাকবে বলে তারা আশা করছেন।
পেঁয়াজ বীজ গাছের সাদা কদম তথা গোলাকারের বড় ফুল শুকিয়ে বের হয় কালো দানা বা বীজ। আকাশ ছোঁয়া বাজার দরের কারণে একে বলা হয় কালো সোনা। একটা সময় পুরোপুরি আমদানি নির্ভর থাকলেও দিনে দিনে দেশে এই কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের আবাদ বাড়ছে। দেশের পেঁয়াজ বীজের মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ উৎপাদন হয় ফরিদপুরে। চলতি মৌসুমে এ জেলার চাষীদের সবমিলিয়ে পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও প্রাকৃতিক পরাগায়নের অভাবে এবার আবাদের তুলনায় পেঁয়াজ বীজের উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাওয়ার তীব্র আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। সরেজমিন কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ও কৃষি দফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে এ তথ্য।
বলিউডের গানে উদ্দাম ড্যান্স দিয়ে ঝড় তুললো জাপানের একদল যুবতী
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চলতি মৌসুমে ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে ১৮শ ৯০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে প্রায় সাড়ে ৭ মেট্রিকটনেরও বেশি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে এবার। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে জেলা সদরে প্রায় ২০৮ হেক্টর জমিতে। এরপরে ভাঙ্গায় ১৭৬, সদরপুরে ১৪৬, চরভদ্রাসনে ৬৮, মধুখালীতে ৬৮, বোয়ালমারীতে ৩৪, নগরকান্দায় ২৮, সালথায় ২২ ও আলফাডাঙ্গায় ৬ হেক্টর জমিতে এবার পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।