জুমবাংলা ডেস্ক : নাম অসীত কুমার বিশ্বাস। বয়স ৬৫ বছর। বাড়ি মাগুরা সদরের বরিশাট গ্রামে। দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ১ টাকার শিঙ্গাড়া বিক্রি করছেন মাগুরা সদরের গাংনালিয়া বাজারে। তার সিঙ্গারা দাম কম ও এতই সুস্বাদু হওয়ার ফলে জেলার সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ছুটে আসে খেতে। সরজমিন গাংনালিয়া বাজারে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।
ক্ষুদ্র এ ব্যবসায়ী অসীত কুমার সাহা জানান, দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে গাংনালিয়া বাজারে আমি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে এ শিঙ্গাড়া বিক্রি করে আসছি। শুরু থেকে এ শিঙ্গাড়া মাত্র ২৫ পয়সা দরে বিক্রি করতাম। সেই সময় সবকিছুর দাম খুবই কম ছিল। অনেক যত্নের সহকারে তৈরি করতাম এ শিঙ্গাড়া। মানুষ তখন মন ভরে খেতো।
তারপর ২০০২ সাল থেকে ১ টাকায় বিক্রি করি এ শিঙ্গাড়া। এখন সব জিনিসের দাম খুবই বেশি। সাধারণত ১ টাকায় বর্তমানে কিছুই পাওয়া যায় না। শুরু থেকে এ শিঙ্গাড়ার চাহিদা খুবই বেশি। স্থানীয় ক্রেতার পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ছুটে আসে আমার এ শিঙ্গাড়া খেতে। শুধু জেলার ক্রেতারাই নন। পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ, নড়াইল ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ক্রেতারা এ বাজারে আসে আমার দোকানে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টায় এ বাজারে শুরু করি ব্যবসা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ শিঙ্গাড়া তৈরিতে লাগে ময়দা, আলু ও তেল। বর্তমানে এসব পণ্যের দাম বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়াতে আমরা হিমসিম খাচ্ছি। দিনরাত ২ হাজার শিঙ্গাড়া বিক্রি হয়। এ কাজে আমাকে আমার দুই ছেলে অপূর্ব ও ছোট ছেলে অভি সহযোগিতা করছে। মানুষের মনে ভালো অবস্থান তৈরি করেছি বিধায় সব বয়সী ক্রেতা এখানে আসে। আগে একটু বেশি লাভ হতো কিন্তু এখন সব জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ কম হয়।
অসীতের বড় ছেলে অপূর্ব কুমার বলেন, আমি এবার এইচএসসি ১ম বর্ষের ছাত্র। পড়াশুনার পাশাপশি আমি বাবার ব্যবসায় সহযোগিতা করি। শিঙ্গাড়ার পাশাপাশি আমরা এখানে ১ টাকার আলুর চপ, বেগুনি তৈরি করি। বেশি চলে শিঙ্গাড়া। সকাল থেকে রাত অবধি সারাদিন দূর-দুরান্তের অনেক ক্রেতা আসে আমাদের দোকানে। দাম কম ও সুস্বাদু হওয়ায় আমাদের শিঙ্গাড়া বেশি চলে।
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা গ্রামের ক্রেতা আশিক জানান, আমি ব্যবসায়িক কাজে মাসের প্রায়দিনই মাগুরা জেলায় যাই। পথিমধ্যে এ গাংনালিয়া বাজারে অসীত দাদার তৈরি এ সুস্বাদু সিঙ্গারা খাই। বর্তমানে ১ টাকায় তেমন কিছুই হয় না। তবুও দাদা সাধারণ ক্রেতার কথা মাথায় রেখে কম দামে এ শিঙ্গাড়া তৈরি করেন। আমি তার শিঙ্গাড়া খাই ও পরিবারের জন্য নিয়ে যাই।
স্থানীয় বাজার এলাকার ষাট বছর বয়সী জিল্লুর রহমান, হারেজ মোল্যা, সালাউদ্দিনসহ অনেকে বলেন, অসীত দা আমাদের বাজারের পুরাতন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। অতীতে যেমন তার শিঙ্গাড়ার কদর ছিল এখনো তেমনি আছে। মানের দিক থেকে কোনো কমতি না থাকায় তার শিঙ্গাড়া খুবই জনপ্রিয়। আমাদের গাংনালিয়া বাজারে অসীত কুমার বিশ্বাস অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।