জুমবাংলা ডেস্ক : ১৫ বছরেও পদোন্নতি পাননি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ লাখ শিক্ষক। সিদ্ধান্ত হলেও সৃষ্টি হয়নি সিনিয়র শিক্ষক পদ। পাশাপাশি গ্রেড বৈষম্য দূর না হওয়ায় চরম অসন্তুষ্ট শিক্ষকেরা। এ অবস্থা চললে মেধাবীদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন শিক্ষা গবেষকেরা। এছাড়াও রয়েছে মর্যাদার প্রশ্নও।
দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার। এর মধ্যে ৩০ হাজারের বেশী বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষক পদ খালি রয়েছে। সবশেষ ২০০৯ সালে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরপর ২০১৮ সালে গ্রেডেশন তালিকা করে কিছু সিনিয়র শিক্ষকদের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালের শেষে কিছু উপজেলায় পদোন্নতি দেওয়া হলেও মামলার কারণে আবার পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রায় ১৫ বছর ধরে পদোন্নতি দিতে না পারায় দেশের অর্ধেকটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শুন্য।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা বেতন পান ১৩তম গ্রেডে, আর প্রধান শিক্ষকেরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতনের সিদ্ধান্ত ৫ বছর আগে হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, ‘গ্রাজুয়েট, মাস্টার্স এবং ডিপিই এর ট্রেনিং থাকা সত্ত্বেও আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছি। বর্তমান বাজার মূল্য পরিস্থিতিতে এই গ্রেডে বেতন পাওয়ার কারণে প্রাথমিকের শিক্ষকেরা অনেক কষ্টে দিন পার করছেন।’
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জামাল উদ্দীন বলেন, ‘সরকারি স্পষ্ট প্রজ্ঞাপন ও নির্দেশনা থাকা স্বত্তেও কিছু শিক্ষক মামলার পর মামলা দিয়ে পদোন্নতি কার্যক্রম ব্যহত করছেন। যার ফলে পদোন্নতি না পেয়ে মনে কষ্ট নিয়ে দীর্ঘদিন একই পদে থেকে অবসরে যাচ্ছেন অনেক সিনিয়র শিক্ষক। যা অত্যন্ত দূঃখজনক। আশা করি কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সাথে বিষয়টা দ্রুত সমাধান করবেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে বেতন স্কেল নির্ধারণ করা উচিত। পদোন্নতির যে ঘোষণা ছিল, সেটি বাস্তবায়ন না করা অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, মামলার কারণে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড প্রাপ্তি ঝুলে আছে। তবে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো নিয়ে কাজ চলছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘সঠিক বিধি-বিধানের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ যে স্কেল অথবা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার সরকার অবশ্যই এটা সহানুভূতির সাথে বিবেচনায় নিয়েছে এবং করবে। যেহেতু আদালতে এখন মামলা চলমান আছে, মামলা নিষ্পত্তি হলেই আমরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।