বিনোদন ডেস্ক : মৃত্যুর আগে সংবাদমাধ্যমে এক বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক মান্না। ওই সাক্ষাৎকারে মান্না জানান, বাংলা সিনেমার ৪০ জন শিল্পী ‘অশ্লীলতা’র সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও সে সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেন, বাংলা সিনেমা ও শিল্পী সমিতির করণীয় সম্পর্কে।
বাংলাদেশের সাড়া জাগানো জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর পর একাই বাংলা সিনেমাকে সামনের দিকে টেনে তোলেন মান্না। ক্যারিয়ারে শীর্ষে থাকা অবস্থায় দায়িত্ব পালন করেন ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’-র সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও।
‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’ মূলত বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএফডিসি)-কেন্দ্রিক একটি সংগঠন। চলচ্চিত্র শিল্পীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, বিভিন্ন সহায়তা প্রদান এবং নানা দাবি পূরণে ভূমিকা রাখতে এ সংগঠনটি কাজ করে।
ভারতীয় উপমহাদেশে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৩২ সালে। এরই রেশ ধরে দেশবিভাগের পর এদেশে ১৯৫২ সালে ‘পূর্ববঙ্গ চলচ্চিত্র সমিতি’ নামে একটি সংগঠন গড়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠানটিই কালক্রমে হয়ে ওঠে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’। ১৯৮৪ সালে এ সংগঠনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়, যার কার্যালয় এখন এফডিসিতে।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রথম সভাপতি ছিলেন প্রয়াত কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক; সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ। এরপর অনেকেই এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেন। নায়ক মান্না ২০০৪ সাল থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন।
ক্যারিয়ার জীবনে এ অভিনেতাকে কখনও কোনো অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। কিন্তু ওই সময় বাংলা চলচ্চিত্রে চলছিল ‘অশ্লীলতার জোয়ার’। তাই ‘অশ্লীলতার জোয়ার’ ঠেকাতে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসেই এ বিষয়ের সুরাহা করতে কাজ শুরু করে দেন মান্না।
‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’-র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব হাতে নেয়ার পর বাংলা চলচ্চিত্রকে ‘অশ্লীলতা’ নামের ধ্বংসের গহ্বর থেকে টেনে তুলতে তিনি প্রথমেই একটি জরিপ চালু করেন। ওই জরিপে তিনি খুঁজে পান ৪০ জন শিল্পীকে যারা অশ্লীল সিনেমার সঙ্গে জড়িত।
এই ৪০ জন শিল্পীর বিস্তারিত তথ্য বিশ্লেষণ করে নায়ক মান্না আবিষ্কার করেন, ৪০ জন শিল্পীর মধ্যে ৩০ জন শিল্পীই ‘শিল্পী সমিতি’-র সদস্য নন। অশ্লীলতা থেকে মুক্তির জন্য নায়ক মান্না তাই চেয়েছিলেন মিডিয়ায় অভিনয় শুধু তারাই করবেন যারা ‘শিল্পী সমিতি’-র সদস্য। এক্ষেত্রে যে সদস্য অশ্লীল অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত থাকবে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে বলে মনে করতেন অভিনেতা।
নায়ক মান্নার সেই বিশেষ সাক্ষাৎকারটি দেখতে ক্লিক করুন।
একটি অশ্লীল সিনেমার জন্য শুধু শিল্পীদেরই দোষী করতে রাজি ছিলেন না মান্না। কারণ একটি সিনেমার পেছনে কাজ করে প্রযোজক, পরিচালক, ক্যামেরাম্যান, মেকআপ ম্যান, ড্রেসম্যান, প্রোডাকশন ম্যানেজারসহ অনেকেই। তারা সবাই মিলেই একটি অশ্লীল সিনেমা তৈরি করেন। তাই শুধু শিল্পীর ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়া তিনি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেননি।
প্রশাসনিকভাবে সিনেমায় অশ্লীলতা বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারি সাহায্যও নিয়েছিলেন মান্না। পাশাপাশি প্রযোজক ও পরিচালক সমিতিসহ বিভিন্ন সমিতিতে এ নিয়ে আলোচনা করেন সিদ্ধান্ত ও নীতিমালা চালু করেন এ কিংবদন্তী অভিনেতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।